দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: মাধ্যমিকে নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন ও শিক্ষক সঙ্কট মেটাতে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়ার কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। গত ২ মার্চ এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, গণিত ও বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে ডিপ্লোমাধারীদের নিয়োগ দেয়া যাবে। ন্যূনতম দুই বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকা সাপেক্ষে ডিপ্লোমাধারীদের বিএসসি পাস সমমান সার্টিফিকেটও দেয়া যাবে।
শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরদিন ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের অভিভাবক সংগঠন (আইডিইবি) একটি কমিটি গঠন করে। কমিটিকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিয়ারদের বিএসসি সমমান দেয়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরার নির্দেশ দেয়া হয়। এই কমিটি রিপোর্ট জমার আগেই গত ১৫ এপ্রিল কারিগরি শিক্ষা বোর্ড একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের বিএসসি পাস সমমান মর্যাদা দেয়ার বিষয়ে প্রয়োজনীয় মতামত ও সুপারিশ তৈরি করতে বলা হয়।
এদিকে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা এই সিদ্ধান্তে খুশী হলেও, বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররা এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারা জানান, তাড়াহুড়ো করে পরীক্ষা-নীরিক্ষা ছাড়া এমন সিদ্ধান্ত ভালো ফল আনবে না। এতে শিক্ষাখাতে জটিলতা বাড়বে। অপরদিকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের মতে, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য এটি কল্যাণমূখী সিদ্ধান্ত।
ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের সভাপতি এ.কে.এম.এ হামিদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমাদের বিশাল জনশক্তি রয়েছে। একে জনসম্পদে পরিণত করা দরকার। বিএসসি পাস করতে হলে যেখানে ১২০ ক্রেডিট সম্পন্ন করতে হয়, সেখানে একজন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারকে ১৬৫ ক্রেডিট পর্যন্ত পড়াশুনা করতে হয়।
ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ-এর সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী এস এম মঞ্জুরুল ইসলামের মতে সিদ্ধান্তটি খুবই দুঃখজনক। বিষয়টিকে গভীরভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। হঠাৎ করেই এমন কমিটি গঠন করে দেয়ার বিষয়টি খুবই হতাশাজনক।
তিনি আরও বলেন, ডিপ্লোমা ও বিএসসির কারিকুলামে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। এছাড়া, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা মোট ১৪ বছর অধ্যয়ণ করে থাকেন, কিন্তু বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররা ১৬ বছর।
প্রসঙ্গত, বিএসসি প্রকৌশলীরা এইচএসসি পাসের পর যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৪ বছরের কোর্স শেষে ডিগ্রি লাভ করেন। অন্যদিকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারা এসএসসি পাসের পর কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের আওতাধীন পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট থেকে ৪ বছর মেয়াদি কোর্স করেন।