নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শনিবার থেকেই ফিটলিস্ট তৈরির লক্ষ্যে কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হচ্ছে। কিছু সুযোগ সন্ধানী কর্মকর্তাও ডিসি হিসাবে নিয়োগ পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। তবে বিগত সরকারের সময়ে বিভিন্ন ব্যাচের সুবিধাভোগী কর্মকর্তাদের মধ্যে থেকে যারা ডিসি হিসাবে নিয়োগ পেতে চেষ্টা করছেন, তারা সফল হওয়ার সুযোগ কম বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন ক্যাডারের ২৪তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের মধ্যে ৬০ জনের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাচে ৩১৭ জনের সাক্ষাৎকার নেওয়ার পর ২৫ এবং ২৭ বিসিএসের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ভাইবা নেওয়ার হবে।
২৪ ব্যাচের অনেকেই ছিলেন মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীদের একান্ত সচিব (পিএস)। তারাও ডিসির ফিটলিস্টের সাক্ষাৎকারে অংশ নিয়েছেন। বিশেষ করে সাবেক মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার পিএস আবু নঈম মোহাম্মদ মারুফ খান নরসিংদীর ডিসি ছিলেন। বর্তমানে তিনি পরিবেশ, বন জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ উপদেষ্টার একান্ত সচিব হিসাবে কাজ করছেন। ২৪ ব্যাচের কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বিগত পাঁচ বছর মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরার পিএস ছিলেন। সম্প্রতি তিনি স্থানীয় সরকার বিভাগে বদলি হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন এনজিওর মালিকদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ২৭তম ব্যাচের মো. তাজিম উর রহমান উপপরিচালক হিসাবে বিজি প্রেসে কর্মরত। তিনি ব্যক্তিগত সফরে ইতালি যাওয়ার আবেদন করলে, তার আর্থিক সামর্থ্য আছে কি না তা যাছাইয়ের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ব্যাংক স্টেটমেন্ট দাখিলে নির্দেশ দেয়। এরপর তিনি ব্যাংক স্টেটমেন্ট দাখিল করেন এবং তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে এক বছরে পাঁচ কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য বেরিয়ে আসে। পরে আর তাকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে বিগত সরকারের সময় সুবিধাভোগী কর্মকর্তাদের এখনও সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি কোনো ভাবেই মানতে নারাজ বৈষম্যে শিকার কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, আগের সরকারের সময় পদোন্নতিসহ নানা সুবিধাভোগীদের ডিসি হিসাবে পদায়ন মানে মাঠ প্রশাসন আওয়ামী লীগের হাতে ছেড়ে দেওয়ার শামিল।
বাংলাদেশ অ্যাডমিনিট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএএসএ) আহবায়ক ডক্টর আনোয়ার উল্ল্যাহ বলেন, তাড়াহুড়া করে ডিসি প্রত্যাহার করার দরকার কি? বরং ধীরে সুস্থে ডিসি প্রত্যাহার করতে হবে। অবশ্যই বঞ্চিত কর্মকর্তাদের মধ্যে থেকে দক্ষ, সৎ, যোগ্য কর্মকর্তা বাছাই করে নিয়োগ চূড়ান্ত করতে হবে। ডক্টর আনোয়ার উল্ল্যাহ আরও বলেন, বিগত সরকারের সময়ে তৈরি করা ফিটলিস্টে যদি কাউকে ডিসি হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়, তাহলে ছাত্র-জনতা তা মানবে না। মাঠ পর্যায়ে ফের ক্ষোভের সঞ্চার হবে। এতে হিতেবিপরীত হবে। ফলে সরকার এক ধরনের অস্বস্তিতে পড়বে।