যথাযোগ্য মর্যাদা ও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে গাজীপুরের ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (ডুয়েট) স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। রোববার দিবসটি উপলক্ষে সূর্যোদয়ের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, উপাচার্যের বাসভবন, লাইব্রেরি ভবন ও হলগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের দেয়ালে স্থাপিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে এবং সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। দিবসটি উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. হাবিবুর রহমান এক বাণীতে বলেন, বাঙালি জাতির আত্মপরিচয় অর্জনের দিন ২৬ মার্চ। পরাধীনতার শেকল ভাঙার দিন। লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। এই অর্জনকে অর্থবহ করতে সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন স্বাধীনতা মানে দায়িত্বশীলতা। বঙ্গবন্ধু আত্মসমালোচনা করতে ভালবাসতেন। বঙ্গবন্ধুর এই দায়িত্বশীলতা ও আত্মসমালোচনার দর্শনটি আমাদের জীবনেও চর্চা করে যেতে হবে, যাতে আমরা সর্বোচ্চ ত্যাগের মাধ্যমে মানবকল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত করতে পারি।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকার মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে দেশ ও জাতির উন্নয়নে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, ক্রীড়া, তথ্যপ্রযুক্তি, বৈদেশিক সম্পর্ক, নগর উন্নয়ন, গ্রামীণ উন্নয়ন, মানবসম্পদ উন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তা, নারী উন্নয়নসহ প্রতিটি সেক্টরে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করেছে। এর ফলে আমাদের ক্রয়ক্ষমতা, মাথাপিছু আয়, রফতানি, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। তিনি উন্নয়নকে আরো জনমুখী ও টেকসই করতে এবং সুশাসন, সামাজিক ন্যায়বিচার, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দর্শনে দীক্ষিত হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে নতুন প্রজন্মসহ সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান।
এছাড়া তিনি ১৫ আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও তাঁদের পরিবারের শাহাদাত বরণকারী সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাসহ জাতীয় চার নেতা এবং মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান।
শোভাযাত্রা শেষে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন একাডেমিক ভবন চত্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং দেশের উন্নয়ন বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুর রশীদ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরে সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য সবাইকে শপথ নেয়ার আহবান জানান। এছাড়া অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন পরিচালক (ছাত্র কল্যাণ) অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম, রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. হিমাংশু ভৌমিক এবং পরিচালক (গবেষণা ও সম্প্রসারণ) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী।