ঢাকা কলেজ উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। পূর্ববাংলার প্রথম কলেজ এটি। আজ ২০ নভেম্বর ঢাকা কলেজের ১৮২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। নানা প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঢাকা কলেজকে যারা আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই দিনে তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। ঢাকা কলেজ এমন একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যা ১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বর্তমান পর্যন্ত তার খ্যাতি, সুনাম ও জনপ্রিয়তা একইভাবে অব্যাহত রেখেছে। ঢাকা কলেজ থেকে শিক্ষালাভ করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম তাদের জ্ঞান ও প্রজ্ঞা দিয়ে বাংলার অবহেলিত পূর্বাঞ্চলে এক নবজাগরণ সৃষ্টি করে। কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রথম বছরেই ঢাকা কলেজ কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়। অতপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা এই কলেজটিকে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে তৃতীয়বারের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়।
১৭৫৭ খ্রিষ্টাব্দে পলাশীর যুদ্ধে বিজয়ী ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার অধিবাসীদের জন্য কোনো শিক্ষানীতি প্রণয়ন কিংবা কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ও সরকারি শিক্ষাব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ফলে এ দীর্ঘ সময়ে এ অঞ্চলের শিক্ষাব্যবস্থা চলতে থাকে ঐতিহ্যগতভাবে। কারণ, হয়তো এই যে, রাজীনীতি এবং বাণিজ্য ও মুদ্রা প্রচার ছিলো তখন কোম্পানির প্রধান লক্ষ্য। তবুও ভারতীয়দের জন্য তারা ১৭৮১ খ্রিষ্টাব্দে ‘কোলকাতা মাদরাসা’, ১৭৮১ খ্রিষ্টাব্দে ‘সংস্কৃত কলেজ’ এবং ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দে কোম্পানির কর্মচারীদের জন্য ‘ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করেছিলো। তবে ১৮১৩ খ্রিষ্টাব্দে চার্টার অ্যাক্টে বিট্রিশ সরকারের নির্দেশ ছিলো ভারতীয়দের শিক্ষার প্রতি মনোযোগী হতে। এই প্রেক্ষিতে ১৮১৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় হিন্দু কলেজ। ১৮৩৫ খ্রিষ্টাব্দে লর্ড মেকলে নামক একজন পার্লামেন্ট সদস্য বিট্রিশ পার্লামেন্টে প্রস্তাব করেন যে ইউরোপীয় জ্ঞান বিজ্ঞানের আলোকে ভারতের শিক্ষার মাধ্যম হবে ইংরেজি। এ প্রেক্ষিতে ভারতের গভর্নর জেনালের লর্ড বেন্টিংক ইন্ডিয়ান এডুকেশন অ্যাক্ট বিল পাস করেন। এই অ্যাক্টের আলোকে ১৮৩৫ খ্রিষ্টাব্দের ২০ এপ্রিল দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কিত দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ জেনারেল কমিটি অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন এর সুপারিশে ১৮৩৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ জুলাই ঢাকায় প্রতিষ্ঠা করা হয় ঢাকা ইংলিশ সেমিনারি, যা ছিলো সমগ্র বাংলার প্রথম সরকারি স্কুল। এ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ফলে এ অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের সামনে পাশ্চাত্যের কলাবিদ্যা, বিজ্ঞান এবং দর্শন উন্মোচিত হতে থাকে। ১৮৪০ খ্রিষ্টাব্দের জেনারেল কমিটি অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন ঢাকায় একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করে। ফলে ১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দের ঢাকা ইংলিশ সেমিনারি স্কুলের ২য় তলায় প্রতিষ্ঠা করা হয় ঢাকা সেন্ট্রাল কলেজ (সংক্ষেপে ঢাকা কলেজ) এবং ঢাকা ইংলিশ সেমিনারি স্কুলের নাম দেয়া হয় ঢাকা গভর্নমেন্ট স্কুল (পরবর্তীকালে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল)। উল্লেখ্য, ঢাকা গভর্নমেন্ট স্কুলের দোতলায় ৩টি কক্ষ নিয়ে ইংরেজি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢাকা সেন্ট্রাল কলেজ তথা ঢাকা কলেজ যাত্রা শুরু করে ১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে (২০ নভেম্বর)। ঢাকা কলেজ প্রতিষ্ঠার পর ঢাকা হয়ে ওঠে সমগ্র পূর্ববাংলার ইংরেজি শিক্ষার কেন্দ্রবিন্দু। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং হিন্দু কলেজের শিক্ষক জে. আয়ারল্যান্ড নিযুক্ত হন ঢাকা কলেজের প্রথম প্রিন্সিপাল।
তৎকালীন শিক্ষাব্যবস্থায় শত শত ছাত্র এফএ, বিএ এবং এমএ পাস করে বের হলেও বস্তুত কিছু সরকারি চাকরি ছাড়া এ ধরনের শিক্ষিত যুবকদের বাস্তব জগতে খুব বেশি চাহিদা না থাকায় শিক্ষিত বেকার যুবকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছিলো এবং যা থেকে জন্ম নেয়ার সম্ভাবনা ছিলো সমাজবিপ্লবী চেতনার। এ ধরনের একটি অবস্থা রাষ্ট্রের ভবিষ্যতের জন্য নিরাপদ নয় বিবেচনা করে সরকার ১৮৭০ এর দশকে ঢাকা কলেজে বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসারে মনোযোগী হয়। ফলে ১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা কলেজে বিজ্ঞানের নতুন নতুন বিষয় পড়ানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর আগে সরকার ও জনগণকে আইনগত শিক্ষা প্রদান করতে ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দের ঢাকা কলেজে আইন বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়-যা ১৮৬৪ খ্রিষ্টাব্দের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়।
তবে ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দের তদানিন্তন পূর্ববঙ্গ ও আসাম সরকারের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে বিলেতের সেক্রেটারি অব স্টেট ঢাকা ল’ কলেজ নামে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দেন। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বিভাগে পরিণত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এটাই ছিল পূর্ববঙ্গ ও আসামের একমাত্র আইন কলেজ। ঢাকা বাইরে থেকে ঢাকা কলেজে পড়তে আসা ছাত্রদের তথ্য প্রথম পাওয়া যায় ১৮৪৩ খ্রিষ্টাব্দে। সে বছর কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায় যে ১৫ জন ছাত্র বিভিন্ন জেলা থেকে এসে ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। তবে ১৮৮০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ঢাকা কলেজে কোনো ছাত্রাবাস গড়ে ওঠেনি। সস্পূর্ণ ব্যক্তিগত অনুদানে ১৮৮০ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা কলেজের জন্য বাংলা বাজারের শিরিশ দাস লেনে রাজচন্দ্র হিন্দু ছাত্র হোস্টেল নামে প্রথম ছাত্রাবাস নির্মিত হয়। ১৯০৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ মে এক সরকারি সভায় ঢাকা কলেজের জন্য একটি আধুনিক ছাত্রাবাস নির্মাণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কার্জন হলের নকশার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নকশায় ঢাকা কলেজের জন্য ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে নির্মিত হয় প্রথম ছাত্রাবাস। বাংলাদেশের কোনো সরকারি কলেজের জন্য নির্মিত প্রথম ছাত্রাবাসও এটি। ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে ‘ঢাকা হল’ নামে এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল হিসেবে যুক্ত হয়। এরপর ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর নাম অনুসারে এই হলের নামকরণ করা হয় শহীদুল্লাহ হল, যা বর্তমানে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হল নামে পরিচিতি পায়।কলেজ ক্যাম্পাস
ঢাকা কলেজের ক্যাম্পাস বেশ কয়েকবার পরিবর্তন ঘটে। কর্নেল গাসটিন এর নকশায় ১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দের ২০ নভেম্বর কোলকাতার বিশপ বেভাবেন্ড ড্যানিয়েল কর্তৃক ঢাকা কলেজের নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। কলেজ ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৮৪৬ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে। ওই বছর ২৫ মে ঢাকা গভর্নমেন্ট স্কুল ও কলেজের ছাত্ররা নবনির্মিত ভবনে ক্লাস শুরু করেন।
১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা কলেজের অবকাঠামো বিষয়ে নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় এবং বর্তমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ১৯০৪ খ্রিষ্টাব্দে জমি অধিগ্রহণ করে ভবন নির্মানের কাজ শুরু করা হয়। ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা কলেজ স্থানান্তরিত হয় নবনির্মিত কার্জন হল ও হাইকোর্ট সংশ্লিষ্ট কয়েকটি ভবনে। ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে ঢাকা কলেজের কার্জন হলসহ ঢাকা কলেজের অনেক স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে দেয়া হয়।
১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আহত সৈনিকদের পুনর্বাসনের জন্য ছেড়ে দিতে হয় হাইকোর্টের কলেজ ভবনটি (যা আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপোরাধ ট্রাইব্যুনাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়)। তখন কলেজটি স্থানান্তর করা হয় লক্ষ্মীবাজারে অবস্থিত ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজে (যা বর্তমানে সরকারি কবি নজরুল কলেজ)। পরবর্তীকালে লক্ষ্মীবাজার থেকে সিদ্দিকবাজারে অবস্থিত মরহুম খান বাহাদুর আব্দুল হাই এর একটি ব্যক্তিগত ভবনে কলেজের দাপ্তরিক ও একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালিত হতে থাকে। ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনের সময় ঢাকা কলেজ অবস্থিত ছিলো পুরান ঢাকার এই সিদ্দিকবাজারে। অবশেষে ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে বর্তমান ক্যাম্পাসে (নিউমার্কেট এলাকা) নতুনভাবে শুরু হয় ঢাকা কলেজের পথচলা। তখন ঢাকা কলেজের জমির পরিমাণ ছিলো ২৪ একর। এরশাদ সরকারের আমলে ৬ একর জমি ছেড়ে দিতে হয়, যেখানে গড়ে ওঠে চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট। বর্তমানে ঢাকা কলেজ ১৮ দশমিক ৫৭ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত।
ঢাকা কলেজের ডিগ্রি ক্লাসে অধ্যয়নরত ছাত্রদের নিয়ে যাত্রা শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা পেতেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ। নবপ্রতিষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ভর্তির আগ্রহ ছিলো কম। তাই ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাস থেকে ঢাকা কলেজের ইন্টারমিডিয়েট ক্লাসকে কলেজের বিএ, বিএসসি এবং এমএ ও এমএসসি ক্লাস থেকৈ আলাদা করে ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ নামে একটি কলেজ গঠন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতিষ্ঠিত করতে ঢাকা কলেজ যে ত্যাগ স্বীকার করে তা অতুলনীয়। এটা করতে যে ঢাকা কলেজকে তার অতীতের সব ঐশ্বর্যকে হারাতে হয়। দ্বিতীয় বিম্বযুদ্ধ শেষে ঢাকা কলেজ নিজেকে দেখতে পায় ফেলে আসা পুরনো ঢাকার ছড়িয়ে ছুটিতে থাকা কয়েকটি বাড়িতে। এভাবে নানা ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যদিয়েও ঢাকা কলেজ শিক্ষাক্ষেত্রে তার অগ্রাযাত্রা অব্যাহত রাখতে সমর্থ হয়।
শিক্ষায় অবদান রাখার পাশাপাশি পূর্ববঙ্গে শিক্ষিত মধ্যভিত্তি শ্রেণির বিকাশ, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক জাগরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ঢাকা কলেজ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগামে এ কলেজের ছাত্রদের অবদান অপরিসীম। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের পর প্রথম ভাষা শহীদ দিবস পালন উপলক্ষে সিদ্দিক বাজারস্থ ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসে নির্মিত হয়েছিল প্রথম শহিদ মিনার। এ কারণে এর উদ্যোগক্তা ইকবাল আনসারী খান ও এনাম আহম্মেদ চৌধুরীসহ ১০ জন ছাত্রকে কলেজ হতে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। উল্লেখ্য, ইকবাল আনসারী খান ছিলেন ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের ১৫৪ ধারা ভঙ্গকারী প্রথম দলের নেতৃত্ব দানকারী নেতা। এ ছাড়া ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের মহান মুক্তিযুদ্ধে এ কলেজের ৯ ছাত্র শহীদ হন। ঢাকা কলেজের অনেক শিক্ষার্থী স্ব স্ব ক্ষেত্রে অবদানের জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী এবং মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মাউমুন আবদুল গাইয়ুম, ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি...’ গানটির রচয়িতা আবদুল গাফফার চৌধুরী, ভাষাবীর এম এ ওয়াদুদ, শফিক রেহমান (সাংবাদিক), ইকবাল আনসারী খান (ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের প্রাক্তন ভিপি), ড. রফিকুল ইসলাম, ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধির প্রবক্তা রেজাউল হক মুশতাক, বঙ্গবন্ধুর দুই সন্তান ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এবং লে. শেখ জামাল ঢাকা কলেজের ছাত্র।
নৈসর্গিক সৌন্দর্যের এক অপার লীলাভূমি ঢাকা কলেজের সম্মুখভাগে রয়েছে সুদৃশ্য বাগান, লন টেনিস ও বাস্কেটবল খেলার মাঠ। এর পাশেই ২ নং গেইট সংলগ্ন স্থান মুক্ত মঞ্চ, কলেজের পশ্চিম প্রান্তে রয়েছে ৮টি ছাত্রাবাস ও মসজিদ। কলেজের মূল ভবনের পশ্চিম দিকে এবং ছাত্রাবাসের সম্মুখে রয়েছে ২টি বিশাল খেলার মাঠ ও একটি পুকুর। পুকুরের পাড়ে কলেজের ক্যান্টিন ও জিমন্যাসিয়াম। পূর্ব-দক্ষিণ প্রান্তে অর্থাৎ প্রধান গেটের সামনেই শহিদ মিনার, আইসিটি ভবন, উদ্ভিদবিজ্ঞান ভবন, অধ্যক্ষের বাসভবন ও শিক্ষকদের জন্য একটি আবাসিক ভবন। এ ছাড়া শহীদ মিনারের পাশেই সদ্য নির্মিত হয়েছে লে. শেখ জামাল এর নামে ১০ তলা একাডেমিক ভবন। কলেজের মূল ভবনের নিচতলায় তৈরি করা হয়েছে ডে-কেয়ার সেন্টার। এ ছাড়াও নির্মাণাধীন রয়েছে ভাষাবীর এমএ ওয়াদুদ পাঠাগার ও একটি ১০ তলা ছাত্রাবাস। ‘কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান’ ‘ব্যবসায় শিক্ষা’ এবং ‘বিজ্ঞান’ অনুষদের অধীনে ১৯টি বিভাগ রয়েছে ঢাকা কলেজে। ১৯টি বিভাগেই স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর কোর্স চালু আছে। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ১ আগস্ট থেকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ছাত্রদের জন্য নন-ক্রেডিট কোর্স চালু আছে। অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষসহ বিভিন্ন বিভাগে ২৪২ জন শিক্ষক আছেন। কর্মরত শিক্ষকদের মধ্যে অনেকেই পিএইচডি ও এমফিলসহ অন্যান্য উচ্চতর ডিগ্রিধারী।
লেখক : ড. মো. আব্দুল কুদ্দুস সিকদার, সাধারণ সম্পাদক, শিক্ষক পরিষদ ঢাকা কলেজ
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।