ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রশাসনিক ভবনে (রেজিস্ট্রার ভবন) সেকশন অফিসার বোরহান উদ্দিনের বিরুদ্ধে স্যার বলে সম্বোধন না করায় এক শিক্ষার্থীকে হয়রানি ও কাজ করে দিতে অস্বীকৃতি জানানোর অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের ২০৮ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় আগামী রোববার উপাচার্যের কাছে অভিযোগ দেবেন বলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মো. ওয়ালিউল্লাহ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছেন।
ওয়ালিউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। তিনি মাস্টার দা সূর্য সেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। সেই সঙ্গে হল শাখা ছাত্রলীগের উপ-শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক পদে রয়েছেন।
তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, সকালে সব কাগজ নিয়ে নাম সংশোধনের জন্য সেকশন অফিসার বোরহান উদ্দিনের (শিক্ষা-২) ডেস্কে যাই। কিন্তু তাকে পাইনি। তার টেবিল থেকে নম্বর নিয়ে ফোন দিয়ে জানতে পারি তার আসতে আরো ২৫ মিনিট সময় লাগবে। পরে সকাল সাড়ে ১০ টায় তিনি আসেন। এসে আমার সব কাগজ দেখলেন তারপর আমি আমার কাগজপত্র দেখালে, তিনি আমার ভর্তি সনদ যোগ করতে বলেন। আমি হল থেকে ভর্তি সনদ নিয়ে পৌনে ১২ টার সময় তাঁর কাছে যাই। তখন তাঁকে কাকা বলে সম্বোধন করলে তিনি ক্ষেপে যান।
মো. ওয়ালিউল্লাহ বলেন, উনার বয়স ৫৭-৫৮ মনে হয়েছিলো, তাই তাকে ভাই না বলে, কাকা বলে সম্বোধন করি। উনাকে কাকা বলে সম্মোধন করাতে তখনই সে আমার প্রতি তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠেন। তিনি বলেন, অফিসের ভাষা স্যার। স্যার ডাকবে। আমি বললাম, আপনাকে স্যার কেন ডাকবো? আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। আপনি কি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক? তাহলে আপনাকে স্যার সম্মোধন করতাম। তিনি বলেন, আমরা স্যার না হলেও তো আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার। এসময় তার পাশের ডেস্কের একজন সেকশন অফিসার আমার সঙ্গে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে কথা বলতে থাকে। তিনিও বলেন, স্যার না ডাকতে পারলে সরাসরি তার নাম ধরে ডাকবা। ভাই বা কাকা এগুলো ডাকতে পারবা না।
ওই শিক্ষার্থী আরো বলেন, এ পর্যায়ে রুমের সবাই বিষয়টি শুনছিলো। পরে আমি বলেছি, আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে বিচার দেবো। তিনি বলেন, দেও বিচার! দেখি করতে পারো। পরে আমি বললাম, আমার কাগজ দেখেন। সে কাগজ দেখলো। কিন্তু বললো, নাম সংশোধন করতে হলে এতে আরো অনেক কাগজ যুক্ত করতে হবে। অথচ আগে সে যেসব কাগজ নিয়ে যেতে বলেছে, সবই নিয়েছি। একথা বলার পর সে বললো আমি পারবো না। তুমি অন্য ডেস্কে যাও। সে কাজটা করে দেয়নি। পরে অন্য রুমে গিয়ে এক ভাইয়ের সহযোগিতায় কাগজগুলো জমা দিয়েছি।
মন্তব্য জানতে সেকশন অফিসার বোরহান উদ্দিনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এক পর্যায়ে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রবীর কুমার সরকার বলেন, একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিং নিয়ে সারাদিন ব্যস্ত থাকাতে এ ব্যাপারে আমি এখনো পর্যন্ত কিছু জানতে পারিনি। বিষয়টি জেনে আমি বিস্তারিত জানাতে পারবো। তাছাড়া প্রতিটি সেকশনে একজন করে ডেপুটি রেজিস্ট্রার থাকেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার এ বিষয়ে জানতে পারবেন।
এদিকে ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা-২) মুনশী শামস উদ্দিন আহম্মদের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনিও ফোন রিসিভ করেননি।