দৈনিক শিক্ষাডটকম ঢাবি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ফেরদৌসের বিরুদ্ধে এবার ছাত্রীর জিমেইল অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর আগে এ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীটি যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছিলেন। এরপর তিনি ছাত্রীর পরিবারকে হুমকি দিয়েছেন। মেইল হ্যাকের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত এখনো চলছে বলে জানা গেছে।
তদন্ত কমিটির প্রধান কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোসাদ্দেক হোসেন কামাল। সদস্য একই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসিফ হোসেন খান।
সম্প্রতি ফলিত গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ফেরদৌসের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বরাবর যৌন হয়রানির একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেন এক ছাত্রী। এর কিছুদিন পরই অভিযুক্ত শিক্ষক তার বন্ধু, ঢাবির ফলিত গণিত বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোপালগঞ্জ) কোষাধ্যক্ষ ও ড. মো. মোবারক হোসেন এবং তার স্ত্রীকে ভুক্তভোগীর বাসায় পাঠান। তারা অভিযোগ তুলে নিতে ভুক্তভোগীর পরিবারকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করেন এবং হুমকি দেন। বিষয়টি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানালে প্রক্টর অফিস থেকে তদন্তাধীন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য অধ্যাপক মোবারকের কাছে গত ১ জুন শোকজ নোটিশ পাঠিয়ে ১০ জুন বিকেল ৪টায় প্রক্টর অফিসে উপস্থিত থাকতে বলা হয়। কিন্তু গতকাল সোমবার তিনি ঢাবি প্রক্টর অফিসে উপস্থিত হননি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ফেরদৌস স্যারের আওতায় থিসিস করার সময় আমি যৌন হয়রানির শিকার হয়েছি। এ বিষয়ে উপাচার্যের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। এরপর ফেরদৌস স্যারের পক্ষ থেকে আমাদের বাসায় গিয়ে আমার পরিবারকে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হয়।
তিনি বলেন, গত ৩১ মে অধ্যাপক ফেরদৌস মেইল অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে তার ব্যক্তিগত তথ্য নিজের আয়ত্তে নিয়ে নেন। এদিন ফোনে একটি নোটিফিকেশন আসে, কেউ একজন আমার জিমেইলে লগইন করেছে। তখন বুঝতে পারি, মেইল হ্যাক হয়েছে। অভিযোগ নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে যে কথাগুলো হয়েছে, সেগুলো ফেরদৌস স্যারের জিমেইলে ফরওয়ার্ড করে নেওয়া হয়েছে। মেইলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া মানে এই নয় যে, শুধু মেইলগুলো দেখতে পারে। বরং মেইল নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে গুগল ফটোস, ড্রাইভ, নোটসহ অনেক ব্যক্তিগত তথ্যের সফটওয়্যারগুলোরও নিয়ন্ত্রণ নেওয়া হয়। তাই আমি খুব আতঙ্কে আছি।
ছাত্রীকে যৌন হয়রানি, হুমকি-ধমকি প্রদান ও মেইল অ্যাকাউন্ট হ্যাকের অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে ড. মুহাম্মদ ফেরদৌস কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। এক পর্যায়ে বলেন, তদন্তাধীন বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। বাসায় গিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে অধ্যাপক ড. মো. মোবারক হোসেনকে কল দিয়ে পাওয়া যায়নি।
অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত প্রায় শেষের দিকে। শিগগিরই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমানকে কল দিয়ে পাওয়া যায়নি।