দীর্ঘ ৪ বছর ধরে আটকে থাকা বোর্ড বৃত্তির টাকার দাবিতে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) অধ্যয়নরত বৃত্তিপ্রাপ্ত মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা।
রোববার (২১ মে) রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদের ব্যানারে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় মাদ্রাসা থেকে উচ্চমাধ্যমিকে সরকারি বোর্ড বৃত্তিপ্রাপ্ত ভুক্তভোগী ঢাবির অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধন থেকে বৃত্তির টাকা আটকে রাখার প্রতিবাদ ও অনতিবিলম্বে অর্থ প্রদানের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। এ দাবির সঙ্গে সংহতি জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়াস সিজার তালুকদার ও ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে পরবর্তী কোনো ব্যাচ বৃত্তির টাকা পায়নি। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা কেবল একবার টাকা পেয়েছে। বারবার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিলেও তার কোনো বাস্তবায়ন হয়নি। এমনকি গত ২০২২ সালের ৩ আগস্ট এক মানববন্ধন থেকে একই দাবি জানানো হলেও কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে অদ্যাবধি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এছাড়াও মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালকসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সাথে সাক্ষাৎ করে দাবি জানানো হয়েছে। চিঠি ও স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে মাউশি ও ঢাবি ভিসি বরাবর। তবু কোনো দৃশ্যমান ফলাফল আসেনি।
শিক্ষার্থীরা বলেন, বৃত্তি শিক্ষার্থীদের কৃতিত্ব ও মেধার স্বাক্ষর। মেধাবীদেরকে রাষ্ট্র কর্তৃক পুরস্কৃত করার জন্য যে ব্যবস্থা করা হয়েছে, সেখানে ব্যবস্থাপনার যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। যার দরুন অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে রাষ্ট্রের মেধাবী সন্তানেরা। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। একইসাথে অনতিবিলম্বে মাউশি, মাদরাসা অধিদপ্তর ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সমন্বয়পূর্বক বৃত্তির অর্থ প্রদানের দাবি জানাই।
মানববন্ধন থেকে শিক্ষার্থীরা আগামী এক মাসের মধ্যে বৃত্তির টাকা না পেলে উচ্চ আদালতে রিট করার ঘোষণা দেন। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা মাউশির দিকে যাত্রা করেন।
আগামী জুনের মধ্যে মাউশি কর্তৃপক্ষ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের বৃত্তির টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন জুলিয়াস সিজার তালুকদার।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদের উদ্যোগে মানববন্ধন ও পদযাত্রা শেষে মাউশিতে গেলে মাউশির পরিচালক (প্রশাসন) দায়িত্ব নিয়ে আমাদের নিশ্চিত করেছেন যে, সব প্রক্রিয়া শেষ করে জুনের মধ্যেই মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের বোর্ড বৃত্তির টাকা দেওয়া হবে। তবে যথাসময়ে টাকা না পেলে আমরা আরও কঠোরতর পদক্ষেপ নেব।