দৈনিকশিক্ষাডটকম, ঢাবি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থীর তুলনায় নারীরাই এগিয়ে আছে। গত তিন বছরের সমীক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থী ৫২ শতাংশ এবং পুরুষ শিক্ষার্থী ৪৮ শতাংশ।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলে আয়োজিত ‘স্বর্ণপদক ও বৃত্তি প্রদান- ২০২২’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।
অনুষ্ঠান শুরু হয় সম্মিলিত জাতীয় সংগীত গাওয়ার মধ্য দিয়ে। পরবর্তী নৃত্য পরিবেশন করে ঢাবির নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে স্বাগত বক্তৃতার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়।
উপাচার্য বলেন, বেগম রোকেয়া শুধু নারী জাগরণের পথিকৃৎ নয় আমি বলবো তিনি পুরুষ জাগরণেরও পথিকৃৎ। কারণ তিনি যে স্কুলটি করেছেন সাখাওয়াত মেমোরিয়াল স্কুল যেটি তার স্বামীর নামে করেছেন। নারী জাগরণের জন্য যোগ্য নেতৃত্বের খুবই প্রয়োজন এবং নারী নেতৃত্বের তো আরও বেশি প্রয়োজন। বাংলাদেশে সেদিকটা উন্মোচন করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ডিসিশন মেকিং এ যদি নারী নেতৃত্ব না আসে তাহলে যতই নারী নেতৃত্বের কথা আমরা বলি সেটি কিন্তু কার্যকর হবে না। নারী জাগরণ যতদিন অর্থনীতির সাথে সম্পৃক্ত না হবে, যতদিন পর্যন্ত নারীদের অর্থনৈতিক মুক্তি শানিত না হবে ততদিন পর্যন্ত নারী জাগরণ কার্যকর হবে না। কারণ অর্থনীতি ও মুক্তি দুটি সমার্থক শব্দের ন্যায়। সেজন্য অর্থনৈতিক মুক্তি ব্যতীত নারী মুক্তির কথা ভাবতে পারি না।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে পুরুষদের তুলনায় আমাদের দেশে নারীরা অনেক এগিয়ে আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে গত তিন বছরের সমীক্ষায় নারী শিক্ষার্থী ৫২ শতাংশ এবং পুরুষ শিক্ষার্থী ৪৮ শতাংশ। এছাড়া বিভিন্ন পুরস্কার, শিক্ষক নিয়োগসহ সব ধরনের প্রতিযোগিতায় নারীরা এখন এগিয়ে। শুধু শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেই নয় আমার উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) থাকাকালীন সময়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও ৫৬ শতাংশ নারী দেখেছি। সুতরাং নারীরা এখন সব দিক থেকেই এগিয়ে রয়েছে।
এসময় তিনি বেগম রোকেয়াকে একজন বড় গবেষক হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, বেগম রোকেয়া তার সুলতানা’স ড্রিম রচনায় স্বপ্নের মাধ্যমে নারী নেতৃত্ব তুলে ধরেছেন। সেখানে তিনি তুলে ধরেছেন সূর্যের রশ্মি ব্যবহার করে কিভাবে সোলার এনার্জি তৈরি করা যায়। এবং সেই শক্তি কিভাবে কৃষি খাতে ব্যবহার করা যায় সেই কথাও তিনি বলে দিয়েছেন। ভবিষ্যৎ নারী নেতৃত্ব সম্পর্কে তিনি এই রচনায় ধারণা দিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে স্বর্ণপদক পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী আরজু আফরিন ক্যাথি। উপাচার্য তার হাতে স্বর্ণপদক তুলে দেন। এছাড়া সাতজন মেধাবৃত্তি এবং একজন কল্যাণ বৃত্তি পেয়েছেন।
রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ ড. নিলুফার পারভীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মমতাজ উদ্দিন আহমেদসহ বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও শিক্ষকবৃন্দ।