ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই জন অধ্যাপকের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট নেয়া সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। তারা বলেছেন, দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে নেয়া শাস্তিমূলক সিদ্ধান্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ ও নাগরিকের মতপ্রকাশের অধিকারের পরিপন্থী।
গতকাল শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে নিন্দা জানিয়েছেন সাদা দলের আহ্বায়ক মো. লুৎফর রহমান এবং যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান ও আবদুস সালাম। দুইজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের বিষয়ে গত শুক্রবার সাদা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে হওয়া আলোচনার বিষয় উল্লেখ করে এ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি প্রশাসনিক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদকে। এরপর গত ৩০ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত নেয়, ইমতিয়াজ আহমেদ ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো একাডেমিক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পারবেন না।
এছাড়া বিএনপিপন্থী শিক্ষক ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ ফেসবুকে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক নিয়ে একটি ‘মনগড়া ও ভিত্তিহীন’ পোস্টের বিষয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিনের একটি প্রতিবেদন সিন্ডিকেট সভায় তুলে ধরা হয়। পরে মুচলেকার শর্তে আমানুল্লাহর ক্ষমার আবেদন মঞ্জুর করে সিন্ডিকেট।
সাদা দলের সভায় গত ৩০ এপ্রিলের সিন্ডিকেট সভায় অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ ও অধ্যাপক আমানুল্লাহর বিরুদ্ধে নেয়া পৃথক সিদ্ধান্তের ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ এবং তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি প্রতিষ্ঠানে কোনো বিষয়কে কেন্দ্র করে একাডেমিক বাহাস হবে, পাল্টাপাল্টি যুক্তি উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনের প্রয়াস চালানো হবে, এটিই প্রত্যাশিত। কিন্তু তারা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছে, বর্তমান প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক বাহাস, স্বাধীন মতপ্রকাশ ও মুক্তবুদ্ধিচর্চার ঐতিহ্য নস্যাৎ করার অপ্রচেষ্টায় লিপ্ত।
সাদা দলের নেতারা আরো বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সরকার তথা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেই ক্ষান্ত হচ্ছে না, বরং অধিকতর শাস্তির আওতায় আনার জন্য সরকারকে অনুরোধ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাতন্ত্র ও স্বায়ত্তশাসন অকার্যকর করে দিচ্ছে।