পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের ক্যানটিন ও ডাইনিংয়ে খাবারের দাম বেড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। প্রথম সেহরি থেকেই বিভিন্ন হলের ক্যানটিন-ক্যাফেটেরিয়ায় প্রায় দ্বিগুণ দামে খাবার বিক্রি হতে দেখা গেছে বলে জানালেন শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্যসেন হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ক্যানটিনে খাবারের ধরনভেদে সেহরিতে ৭০-৯০ টাকা পর্যন্ত দামে মোটামুটি মানের খাবার বিক্রি করা হচ্ছে। প্রায় একই মানের খাবার ইফতারের পর থেকে বিক্রি করা হয় অর্ধেক দামে। কিছুটা বেশি দামে (৯০-১০০ টাকা) হলগুলোর ডাইনিংয়ে সেহরিতে কয়েক পদের তরকারিসহ ভালো মানের খাবার দেওয়া হচ্ছে।
ক্যানটিন ব্যবস্থাপকদের দাবি, সেহরির জন্য তুলনামূলক ভালো মানের খাবার রান্না করায় খরচ বেশি পড়ছে। কারও কারও অভিযোগ, ক্যানটিনগুলোতে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মীর চাঁদাবাজি ও টাকা ছাড়াই খাওয়ার কারণে খাবারের দাম বাড়াতে হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, খাবারের দাম বাড়লেও মান তেমন বাড়েনি।
খাবারের দুই ব্যবস্থা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের খাবারের জন্য দুই ধরনের ব্যবস্থা আছে। একটি ডাইনিং বা মেস, অন্যটি ক্যানটিন-ক্যাফেটেরিয়া। হল প্রশাসনের নির্ধারিত স্থানে শিক্ষার্থীদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয় ডাইনিং বা মেস। সেখানে শিক্ষার্থীরাই বাজার করেন ও হিসাব রাখেন।
ইজারা বা ভাড়া নেওয়া ব্যবসায়ীদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয় ক্যানটিন। তাঁরা তাঁদের মতো করে খাবারের দাম নির্ধারণ করেন। ডাইনিংয়ের তৈজসপত্র কেনার জন্য প্রশাসনের সামান্য বরাদ্দ থাকলেও ক্যানটিনের জন্য কোনো বরাদ্দ বা ভর্তুকি নেই। হলের ক্যানটিন-ক্যাফেটেরিয়াগুলো ছাড়াও হল ও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে আছে খাবারের দোকানও। ক্যানটিন-ক্যাফেটেরিয়া ও দোকানে নিম্নমানের খাবার পরিবেশনের অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
করোনা পরিস্থিতির কারণে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের মার্চের মাঝামাঝি থেকে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ৫ অক্টোবর থেকে হল ও ক্যাম্পাস খুলে দেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর ক্যানটিনে খাবারের দাম ১০-১৫ টাকা বেড়ে যায়। এর পেছনে যুক্তি ছিল দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। এ ছাড়া প্রতিবছর রমজান এলেই সেহরির খাবারের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। এ বছরও এর ব্যতিক্রম হয়নি বলে জানান শিক্ষার্থীরা।