তথ্য গোপন করে কুবি ভিসি হয়েছেন অধ্যাপক মঈন - দৈনিকশিক্ষা

তথ্য গোপন করে কুবি ভিসি হয়েছেন অধ্যাপক মঈন

দৈনিক শিক্ষাডটকম, কুবি |

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছিলেন অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈন। কিন্তু কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) উপাচার্য হিসেবে নিয়োগের আগে তার ফাইলে উল্লেখ ছিল তিনি ওই বিভাগের নিয়মিত অধ্যাপক। ফলে তথ্য গোপন করেই তিনি কুবির ষষ্ঠ উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। এদিকে, ঢাবির নিয়মিত শিক্ষক উল্লেখ করায় তাকে দুবার ইনক্রিমেন্ট দিয়েছে কুবির অর্থ দপ্তর। তিনি সেটি গ্রহণও করেছেন। 

অর্থ মন্ত্রণালয়ের ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ ফেব্রুয়ারির অফিস স্মারক অনুযায়ী, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং অন্যদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রে অবসর গ্রহণের আগ মুহূর্তে পাওয়া শেষ বেতন চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত পদের বেতন হিসেবে নির্ধারিত হবে। বিশেষ ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত অথবা উভয় পক্ষের সম্মতিতে সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত বেতনই চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত পদের বেতন হিসেবে নির্ধারিত হবে। তবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগকালীন চাকরির জন্য কোনো বর্ধিত পেনশন বা ইনক্রিমেন্ট পাবেন না। 

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কুবি উপাচার্য অধ্যাপক মঈন ২০১১ খ্রিষ্টাব্দে ঢাবির ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক থাকাকালীন চাকরি ছেড়ে দেন। তখন তিনি গ্রেড-৩ এর অধ্যাপক ছিলেন। চাকরি ছেড়ে ২০২০ সাল পর্যন্ত তিনি অস্ট্রেলিয়ায় শিক্ষকতা করেন। পরবর্তী সময়ে ঢাবির একই বিভাগে চুক্তিভিত্তিক অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন। তাকে কুবি উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার প্রজ্ঞাপন জারি হলে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ জানুয়ারি ঢাবি তার সঙ্গে ওই চুক্তি বাতিল করে।

জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী, তৃতীয় গ্রেডের কর্মকর্তা হিসেবে ৬৮ হাজার ৭৭০ টাকা বেতন পেয়ে আসছিলেন অধ্যাপক মঈন। পরবর্তী সময়ে কুবি থেকে দুবার ইনক্রিমেন্ট নিয়ে বর্তমানে তিনি ৭৪ হাজার ৪০০ টাকা করে পাচ্ছেন। তবে তিনি ঢাবির সঙ্গে চুক্তিতে থাকাকালীন আরও কম বেতন পেতেন বলে জানা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তথ্য গোপন করে অধ্যাপক আবদুল মঈন উপাচার্য হয়েছেন এবং অনৈতিকভাবে ইনক্রিমেন্ট গ্রহণ করেছেন।

কুবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. আবু তাহের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই তিনি (অধ্যাপক মঈন) বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট গ্রহণ করছেন। নিয়ম অনুযায়ী তিনি সেটি নিতে পারেন না। এটি অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারি এবং বেআইনি কাজ। অবসর বা চুক্তিতে নিয়োজিত থাকা ব্যক্তিদের নিয়োগ প্রজ্ঞাপন ভিন্ন হয়। কিন্তু অধ্যাপক মঈন উপাচার্য হওয়ার সময় চুক্তিতে থাকার তথ্য গোপন করেছেন। ভুল তথ্য দিয়ে উপাচার্য পদে থাকার নৈতিক অধিকার তার নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আসাদুজ্জামানের কাছে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৭০ জনের মতো শিক্ষক আছে। কার কখন ইনক্রিমেন্ট হয় এটা কি কোষাধ্যক্ষ বসে বসে গুনবে? অর্থ দপ্তরে যিনি বেতন দেখেন (আবু তাহের), তিনি হয়তো ভুল করছেন।’

জানতে চাইলে কুবির অর্থ ও হিসাব দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর মো. আবু তাহের বলেন, ‘তার (অধ্যাপক মঈন) নিয়োগপত্রে কোথাও লেখা নেই যে, তিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন। সে কারণে আমরা ধরেই নিয়েছি তিনি নিয়মিত শিক্ষক। সে হিসেবে ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হয়েছে। এখানে আমাদের কোনো ভুল নেই। আমরা শুধু আদেশ পালন করি, যাচাই-বাছাই করার দায়িত্ব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের।’

দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক কামাল উদ্দীন ভূঁইয়া বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যেভাবে কাগজ দেওয়া হয়েছে সেভাবেই বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে। তার (উপাচার্য) নিয়োগের প্রজ্ঞাপনে কোথাও লেখা নেই যে, তিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত।’ তবে তথ্য গোপনের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈন কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করে বলেন, ‘ইনক্রিমেন্ট যদি নিয়ে থাকি তাহলে ফেরত দেব।’

৭ কলেজ নিয়ে পরিকল্পনা জানালেন শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha ৭ কলেজ নিয়ে পরিকল্পনা জানালেন শিক্ষা উপদেষ্টা অটোরিকশার ধাক্কায় ছাত্রীর মৃত্যু, ৮ দাবিতে জাবিতে ব্লকেড - dainik shiksha অটোরিকশার ধাক্কায় ছাত্রীর মৃত্যু, ৮ দাবিতে জাবিতে ব্লকেড শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা ছাত্রাবাস খোলার দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ - dainik shiksha ছাত্রাবাস খোলার দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ট্রাম্প প্রশাসনে শিক্ষামন্ত্রী হচ্ছেন লিন্ডা ম্যাকমোহন - dainik shiksha ট্রাম্প প্রশাসনে শিক্ষামন্ত্রী হচ্ছেন লিন্ডা ম্যাকমোহন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে চবিতে এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রামে আবেদন করুন, ফি ১০০০ - dainik shiksha চবিতে এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রামে আবেদন করুন, ফি ১০০০ কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বাউবিতে বিএড প্রোগ্রামে ভর্তি, আবেদন ফি ৭০০ - dainik shiksha বাউবিতে বিএড প্রোগ্রামে ভর্তি, আবেদন ফি ৭০০ চবিতে এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রামে আবেদন করুন, ফি ১০০০ - dainik shiksha চবিতে এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রামে আবেদন করুন, ফি ১০০০ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030579566955566