দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক : তফসিল ঘোষণার পর ‘নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা’ ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়ার নীতিগতভাবে অনুমোদন দেয়ায় বিস্ময় ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। ‘নির্বাচনকালীন সরকার’-এর এই ধরনের নীতি সিদ্ধান্ত নেয়া সুবিবেচনাপ্রসূত কি না, এমন প্রশ্নও তুলেছে টিআইবি।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি এ প্রশ্ন তোলে। গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা আইন-২০২৩ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।
টিআইবি বলেছে, এই আইনের সুদূরপ্রসারী প্রভাব অস্বীকার করার সুযোগ নেই। ধাপে ধাপে অংশীজনদের সম্পৃক্ত করে একটি গ্রহণযোগ্য আইন প্রণয়নের চেষ্টা চলছে। এর মধ্যেই খসড়াটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পাওয়ার প্রক্রিয়া ও উদ্দেশ্য প্রশ্নবিদ্ধ।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, নির্বাচনকালীন সরকার তার কার্যক্রম দৈনন্দিন কাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখবে এবং নীতি সিদ্ধান্তের বিষয়গুলো পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের জন্য তুলে রাখা হবে। কিন্তু এই নিয়মের ব্যত্যয় করে গৃহীত মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত সুবিবেচনাপ্রসূত কি না, সেই প্রশ্ন তোলা অবান্তর হবে না। আমরা আশা করি, “নীতিগত অনুমোদন”পাওয়া এই খসড়াটি চূড়ান্ত করার পরবর্তী সব কার্যক্রম সরকার স্থগিত করবে এবং নির্বাচন পরবর্তী সরকার অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে একটি গ্রহণযোগ্য খসড়া প্রস্তুত করে এই প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেবে।
আইনের খসড়ায় টিআইবিসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনের পরামর্শের ভিত্তিতে কয়েক ধাপে বেশকিছু ইতিবাচক সংশোধনী আনা হয়েছে উল্লেখ করে টিআইবি বলেছে, এর পরও তড়িঘড়ি করে প্রশ্নবিদ্ধভাবে মন্ত্রিসভা খসড়াটির নীতিগত অনুমোদন দেয়। এতে আইনকে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতার আলোকে বাস্তবসম্মত আইনের পর্যায়ে নিয়ে আসার প্রক্রিয়াকে সচেতনভাবে বন্ধ করে দেয়া হলো।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেছেন, খসড়ায় ব্যক্তিগত উপাত্তের সংজ্ঞা সুস্পষ্ট করা, বিচারিক নজরদারির মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার নিশ্চয়তা, সরকারের নিয়ন্ত্রণহীন স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদারকি কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠাসহ বেশকিছু সুপারিশ করা হয়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রিরা বিভিন্ন সময় অংশীজনের পরামর্শ বিবেচনা করেই খসড়াটি চূড়ান্ত করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কী অবস্থায় খসড়াটি নীতিগত আনুমোদন পেলো এবং জনস্বার্থ সুরক্ষিত হলো কি না, তা জানার সুযোগ দেয়া হলো না।
ইফতেখারুজ্জামান আরো বলেন, সরকার নিজেই সবচেয়ে বড় উপাত্ত প্রক্রিয়াকারী হওয়ায় উপাত্তের সুরক্ষা বোর্ড সরকারের নিয়ন্ত্রণে রাখা চরম স্ববিরোধিতা। সরকারের উপাত্তপ্রক্রিয়া কার্যক্রমের ওপর নজরদারি করতে পারলে এই বোর্ড তখনই যথাযথভাবে কাজ করতে পারবে। পাশাপাশি জনগণের তথ্যে সরকার বা সরকার সংশ্লিষ্ট ক্ষমতাবানদের যে যথেচ্ছ প্রবেশাধিকার থাকবে না, সেটিও এই বোর্ডকে নিশ্চিত করতে পারতে হবে।