আগামী ৩১ জুলাই ভর্তির শেষ দিন, টাকা জমা দিতে তিতুমীর কলেজের ওয়েবসাইটে ঢুকেই বিড়ম্বনায় পড়েছেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সিরাজুল। সিরাজুলের মতো লিজন, সুজন, রিয়ানরাও পড়েছেন একই বিড়ম্বনায়। ভর্তির টাকা জমা দিতে গিয়ে ওয়েবসাইটে তথ্য সাবমিট করতে পারছেন না তারা। তবে কেউ কেউ বেশ ঝক্কিঝামেলার মুখোমুখি হয়ে টাকা জমা দিতে পেরেছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ কলেজের ওয়েবসাইটে প্রয়োজনীয় কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। অনেক বছর আগে কিছু তথ্য আপলোড করা হলেও সময়ের ব্যবধানে সেগুলো আপডেট করা হয়নি।
মাহফুজুল নামের এক শিক্ষার্থী বলেনন, ‘অকাজের একটি জিনিস, দীর্ঘদিন ধরে কোনো আপডেট নাই, তথ্যের কোনো শৃঙ্খলা নাই’। শেখ আল মামুন নামের আরেকজন বলেন, ‘অরক্ষিত, মাঝে মধ্যেই অকার্যকর, এলোমেলো।
ভর্তির টাকা জমা দিতে বার বার ব্যর্থ হয়ে এক শিক্ষার্থী জানান, ‘কলেজের সার্ভার খুব বাজে, সেশন ফি জমা দেওয়ার পর থেকেই ট্রাই করছি কিন্তু সার্ভারের সমস্যার জন্য দিতে পারিনি।’
তিতুমীর কলেজের ওয়েবসাইট (www.titumircollege.gov.bd) ঘেঁটে শিক্ষার্থীদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। দেখা গেছে, ওয়েবসাইটে 'important order' বক্সে সর্বশেষ ২০১৯ খ্রিষ্টাব্ যৌন হয়রানি অভিযোগ সেল গঠনের নোটিশ দেওয়া আছে। এরপর আর কোনো নোটিশ বা আদেশ সেখানে স্থান পায়নি।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগই কলেজের যৌন হয়রানি অভিযোগ সেল'র কথা জানেন না। ২২টি বিভাগের মধ্যে ৫টি বিভাগের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায় বেশিরভাগ তথ্যই সেখানে হালনাগাদ করা হয়নি। বাংলা বিভাগের নোটিশ বোর্ডে ঝুলছে ভাষানটেক সরকারি কলেজ'র একটি নোটিশ!
ক্লাস রুটিন, রেজাল্ট, সিলেবাস, স্টাফদের বর্ণনা কিছুই হালনাগাদ করা হয়নি। শিক্ষকদের তথ্য সেলে কেবল একজন শিক্ষকের তথ্য হালনাগাদ করা হয়েছে।
এছাড়াও ইংরেজি, অর্থনীতি, পদার্থ বিজ্ঞান ও ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মধ্যে কিছু বিভাগে শিক্ষদের তথ্য বেশ আগে হালনাগাদ করা হলেও নোটিশ, রেজাল্ট, স্টাফদের তথ্য, সিলেবাস ইত্যাদি তথ্যের অনুপস্থিতি দেখা গেছে। ওয়েবসাইটে সর্বশেষ ২০১৯খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত ২০১৭-১৮ সেশনের একটি পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করা হয়েছে।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, কলেজের বর্তমান ওয়েবসাইটি আগামী সপ্তাহ থেকে থাকবে না। আগামী মঙ্গল কিংবা বুধবারে কলেজের নতুন ওয়েবসাইট পাবলিশ করার কাজ চলছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফেরদৌস আরা বেগমের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘শিক্ষকদের তথ্য হালনাগাদ করার জন্য আমরা নোটিশ দিয়েছি। তবে ডিপার্টমেন্ট ভিত্তিক নোটিশগুলো আমরা এখন ইমেইলে ডিপার্টমেন্টগুলোকে দেই।’
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কথাগুলো কিছুটা সঠিক আছে। হয়তোবা কিছু বিভাগের তথ্য আপডেট করা থাকে না, কিছু বিভাগে আপডেট থাকে। এ বিষয়ে অধ্যক্ষ ম্যামের সঙ্গে পরামর্শ করে একটা সমাধানের চেষ্টা করব।’