ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আট শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার, তাদের সিট বাতিল, হল প্রভোস্টকে অব্যাহতিসহ বেশ কিছু জোরালো পদক্ষেপ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনায় গৃহীত পদক্ষেপগুলো জানানো হয়।
তোফাজ্জল হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে ঢাবি প্রশাসন–
১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেছে।
২. অভিযুক্ত ছয় শিক্ষার্থীকে ঘটনা সংঘটিত হওয়ার ৬ ঘণ্টার মধ্যে প্রক্টরিয়াল টিমের সহায়তায় গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতাররা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে এবং বর্তমানে জেলহাজতে আছে।
৩. ১৯ সেপ্টেম্বর সকালেই হল প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়।
৪. ঘটনার ২০ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং কমিটি ইতোমধ্যে একটি রিপোর্ট প্রদান করেছেন। রিপোর্টের ভিত্তিতে হল প্রশাসন অভিযুক্ত আট শিক্ষার্থীর আসন বাতিল করেছে।
৫. বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্ত আট শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে।
৬. অন্য কোনো শিক্ষার্থী জড়িত আছে কি না তা জানার জন্য আরও একটি কেন্দ্রীয় তদন্ত কমিটি গঠন করার উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনও প্রচলিত আইনে তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
৭. হল প্রভোস্টকে সরিয়ে দিয়ে নতুন প্রভোস্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
৮. জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকানোর জন্য পরবর্তী পদক্ষেপ ও করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে একদল শিক্ষার্থী তোফাজ্জল হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে চোর সন্দেহে কয়েক দফায় নির্যাতন করে। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তার বাড়ি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলি ইউনিয়নে। কয়েক বছর ধরে তোফাজ্জল মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিলেন। এর আগে তিনি কাঁঠালতলি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন।