প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় এবার দেশটির নাগরিকদের ত্রিপুরায় প্রবেশের ক্ষেত্রে ডেঙ্গু পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ত্রিপুরার একাধিক এলাকা থেকে ডেঙ্গু সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। সরকারি তথ্য মতে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়েছে। এরপরই নড়েচড়ে বসে ত্রিপুরা রাজ্য সরকার। রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের থেকে এক নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় ভ্রমণ করতে আসা সে দেশের নাগরিকদের স্থল সীমান্তগুলোতে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক। সোমবার (৩১ জুলাই) থেকেই এই পরীক্ষা চালু হয়েছে বলে জানা গেছে।
রাজ্যের `ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড প্রিভেন্টিভ মেডিসিন`র কর্মকর্তা ড. সুপ্রিয় মল্লিক জানান `বাংলাদেশি পর্যটকদের ত্রিপুরায় প্রবেশের ক্ষেত্রে প্রতিটি সুসংহত চেক পোস্টে (আইসিপি) ডেঙ্গু পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আমরা আমাদের স্বাস্থ্য শিবিরগুলোর উপরে জোর দিয়েছি। শ্রীমন্তপুর, বেলোনিয়া এবং আখাউড়া আইসিপি'তে ডেঙ্গু টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ত্রিপুরা প্রবেশের আগে বাংলাদেশি পর্যটকদের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করা হচ্ছে।`
তিনি আরো জানান 'র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট কিট' প্রক্রিয়ার মাধ্যম দিয়ে কোন ব্যক্তির শরীরে সামান্যতম ডেঙ্গুর লক্ষণ থাকলেও তা ধরা পড়বে। যদিও এখনো পর্যন্ত কোনো বাংলাদেশি পর্যটকের শরীরে ডেঙ্গুর লক্ষণ পাওয়া যায়নি বলেই জানা গেছে।` সেক্ষেত্রে ডেঙ্গু পরীক্ষায় পাশ করলেই তবে ত্রিপুরায় প্রবেশের ছাড়পত্র মিলবে।
স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে জানা গেছে গত এক সপ্তাহে রাজ্যে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় সিপাহীজলা জেলার সোনামুড়া এবং পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা। ডেঙ্গু কবলিত এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে নজরদারি চালানো হচ্ছে, কোন ব্যক্তির শরীরের জ্বর বা ডেঙ্গুর কোন লক্ষণ আছে কিনা তাও দেখা হচ্ছে। সেই সাথে ডেঙ্গু সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতেও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশে চলতি বছরে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে ডেঙ্গু। এখনো পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কয়েক হাজার মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। দিনকে দিন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা ডেঙ্গু সংক্রমণের নিরিখে অতীতের সব রেকর্ডকে নাকি ছাপিয়ে যেতে পারে এবার। ইতোমধ্যে ডেঙ্গুজনিত কারণে সেখানে মৃত্যু হয়েছে ২৫০ জনেরও বেশি মানুষের।
এমন এক পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ও অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ থেকেই তার রাজ্যে ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে। সেক্ষেত্রে ডেঙ্গু আটকাতে সীমান্তে ভারতে আগত বাংলাদেশি পর্যটকদের প্রয়োজনীয় শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার দাবিও তুলেছেন মমতা।