দক্ষিণ কোরিয়ায় কুকুরের মাংস বিক্রি বন্ধে আইন পাস করা হয়েছে। স্থানীয় সময় আজ মঙ্গলবার পার্লামেন্টে এই আইন পাস হয়। ২০২৭ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে দেশটিতে কুকুর জবাই এবং বিক্রি বন্ধ করা এই আইনের উদ্দেশ্য। এর মধ্য দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় কুকুরের মাংস খাওয়ার শতাব্দী-প্রাচীন প্রথার অবসান ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিবিসি জানায়, নতুন এই আইনে খাওয়ার জন্য কুকুর পালন বা জবাই নিষিদ্ধ হবে। কুকুরের মাংস বিতরণ বা বিক্রি করা নিষিদ্ধ হবে। এমনকি আইনের আওতায় যারা দোষী সাব্যস্ত হবেন তাদের কারাদণ্ড দেয়া হবে। তবে কুকুরের মাংস খাওয়া বেআইনি হবে না।
এই আইনটি মূলত কুকুরচাষী বা বিক্রেতাদের লক্ষ্য করে প্রণীত হয়েছে। আইন ভঙ্গ করলে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড ও আর্থিক জরিমানা হতে পারে। কেউ যদি খাওয়ার উদ্দেশ্যে কুকুরের বংশবৃদ্ধি করে বা জেনেশুনে কুকুর থেকে তৈরি খাবার সংগ্রহ, পরিবহন বা বিক্রি করে তবে তাকেও জরিমানা এবং কারাদণ্ডের মুখোমুখি হতে হবে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, দক্ষিণ কোরিয়াতে প্রায় ১ হাজার ১৫০টি কুকুরের খামার এবং প্রায় ১ হাজার ৬০০টি রেস্তোরাঁ রয়েছে যারা কুকুরের মাংস দিয়ে তৈরি খাবার বিক্রি করে। দেশটির কুকুর খামার মালিক, কুকুরের মাংসের রেস্তোরাঁ এবং কুকুরের ব্যবসার অন্যান্য কর্মীদের তাদের ব্যবসা বন্ধ বা পরিবর্তন করার জন্য তিন বছরের সময় দেয়া হবে। এ সময় স্থানীয় সরকার সেসব ব্যবসায়ী বা মালিকদের অন্যান্য ব্যবসায় স্থানান্তর করতে সহায়তা করবে।
কোরীয়দের কুকুরের মাংস খাওয়ার অভ্যাস নিষ্ঠুরতার জন্য বিভিন্ন দেশে সমালোচিত হয়েছে। এমনকি দক্ষিণ কোরিয়ার ভেতরেও কুকুরের মাংস খাওয়ার বিরুদ্ধে মত জোরাল হচ্ছে, বিশেষ করে দেশটির তরুণ প্রজন্মের মধ্যে।
এ ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল এবং ফার্স্ট লেডি কিম কেওন হি পশুপ্রেমী হিসেবে পরিচিত। এই দম্পতির ছয়টি কুকুর রয়েছে। ফার্স্ট লেডি কিম কুকুর খাওয়ার অভ্যাস বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে আসছেন।
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় কুকুরের মাংস বিক্রি বন্ধের আইন পাসের খবরকে সাধুবাদ জানিয়েছে প্রাণী অধিকার সংগঠনগুলো ও বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ।