দশম শ্রেণির টেস্ট পরীক্ষায় তিন বিষয় পর্যন্ত অকৃতকার্য শিক্ষার্থীর ফের পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। ১০টি বিদ্যালয়ের ২৬৪ জন শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এ ঘটনা ঘটেছে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে। এ নিয়ে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, গত নভেম্বরে উপজেলার এসএসসি পরীক্ষার্থীরা উপজেলা মাধ্যমিক অফিস মনোনীত অভিন্ন প্রশ্নপত্রে টেস্ট পরীক্ষায় অংশ নেয়। এ পরীক্ষায় উপজেলার কোনো বিদ্যালয়ে ১০ জন কোনো বিদ্যালয়ে ২০ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়। তবে ব্রাহ্মণগাঁও বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫১ জনই অকৃতকার্য হয়।
প্রায় ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় উপজেলা ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা বিস্মিত হন। টেস্ট পরীক্ষায় এক বিষয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের অনুমতি দেওয়া হয়। দুই কিংবা ততধিক বিষয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীকে ফরম পূরণের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
এর প্রতিবাদে গত ১ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণগাঁও বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের অকৃতকার্য শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা বিক্ষোভ করেন। চাপে পড়ে প্রধান শিক্ষক হোসেন খসরু বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে সভায় বসেন। সভায় শুধু গণিত বিষয়ে ফের পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ সিদ্ধান্তও নেওয়া হয় যে, গণিতে পাস করলে ইংরেজিতে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদেরও পাস বলে ধরে নেওয়া হবে।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে অন্যান্য বিদ্যালয়ের অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা নিজ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের কাছে পুনরায় তাদের পরীক্ষা নেওয়ার দাবি করে। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে প্রধান শিক্ষকরা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাকসুদুর রহমানের দ্বারস্থ হন। শেষে ইউএনও জাকির হোসেন মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ ১০টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে নিয়ে সভা করে অকৃতকার্যদের গণিত, ইংরেজি ও একটি গ্রুপ বিষয়সহ তিনটি বিষয়ে ফের পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
লৌহজং মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়কে কেন্দ্র হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার গণিত, সোমবার ইংরেজি প্রথম পত্র, গতকাল মঙ্গলবার ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা হয়েছে। আজ বুধবার গ্রুপভিত্তিক একটি বিষয়ে পরীক্ষা হবে।
মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাকসুদুর রহমান বলেন, ব্রাহ্মণগাঁও বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় টেস্ট পরীক্ষার ফল নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়। সবকিছু বিবেচনা করে অংক, ইংরেজি ও গ্রুপভিত্তিক একটি বিষয়সহ তিনটি বিষয়ে পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ পরীক্ষায় সব বিষয়ে পাস করা শিক্ষার্থীর এসএসসি ফরম পূরণের অনুমতি দেওয়া হবে, অকৃতকার্যদের অনুমতি দেওয়া হবে না। এই পরীক্ষা অকৃতকার্যদের জন্য ফাইনাল পরীক্ষা দেওয়ার শেষ সুযোগ।
টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার নজির নেই বলে জানান, যশলদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান খান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রধান শিক্ষক জানান, সব বিদ্যালয়েই তিন-চার বিষয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের পাশ দেখিয়ে এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ব্রাহ্মণগাঁওয়ের প্রধান শিক্ষক কেন এটা করলেন তা তারা জানেন না।