দুই শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ - দৈনিকশিক্ষা

দুই শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসে নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও একজন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিও) বিভিন্ন অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তারা অনিয়মকে বাস্তবায়ন করার জন্য শিক্ষকদের বাধ্য করান বলে উপজেলার দুইটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুজন প্রধান শিক্ষক ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত একাধিক সহকারী শিক্ষক। অভিযোগ দায়ের করেন উপজেলার ৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৮ জন সহকারী শিক্ষক।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম ইমাম রাজী টুলু। অভিযোগে শিক্ষকরা বলেন, কালীগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসের শিক্ষা কর্মকর্তা ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা দীর্ঘ দিন একই কর্মক্ষেত্রে অবস্থান করার কারণে তারা নানাবিধ অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছেন। অভিযোগগুলো হলো- বছরের মাঝামাঝি সময়ে এসে স্কুল ড্রেস পরিবর্তন এবং শিক্ষা কর্মকর্তা সপ্তাহে দুদিন অফিস করা। ফলে অফিসের কাজগুলো ধীরগতির হয়ে পড়েছে। সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা খেয়ালখুশি মতো অফিসে আসেন, অফিসের কর্মচারীরাও আর্থিক অনিয়মে জড়িয়ে পড়েছেন। এছাড়া শিক্ষকদের সঙ্গে বিভিন্ন সময় দুর্ব্যবহার করা হয়। রবীন্দ্র জয়ন্তী উপলক্ষে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের কাছে বাধ্যতামূলক শাড়ি ও পাঞ্জাবি বিক্রি করা হয়। প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বসার জন্য নিম্নমানের বেঞ্চ সরবরাহ করে অতিরিক্ত মূল্য ধার্য্য করে টাকা কেটে রাখা হয় এবং খেলনা বাবদ অতিরিক্ত মূল্য প্রদানে বাধ্য করা হয়। কিছু শিক্ষক অনিয়মের এসব এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করেন। তাদের মধ্যে উপজেলার তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুজন প্রধান শিক্ষক ও একজন সহকারী শিক্ষক মিলে অন্য শিক্ষকদের এসব করতে বাধ্য করেন। সিøপ ফান্ড ও ক্ষুদ্র মেরামতের টাকা শিক্ষা অফিসের লোক আত্মসাৎ করেন। সিøপ ফান্ডের টাকা শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২০০ জনের বেশি হলে (৫৪০০০+৫৪০০০)= ১ লাখ ৮ হাজার টাকা, প্রাক-প্রাথমিক ১০ হাজার টাকা এবং ক্ষুদ্র মেরামতের সর্বনিম্ন ৪০ হাজার টাকা ও সর্বোচ্চ ৭০ হাজার টাকা। এসব খাতে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়ন ও তুমিলিয়া ইউনিয়নের দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে যোগ্যদের প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত করা হয়, প্রশ্ন-রেজাল্ট কার্ড-প্রসংশাপত্র ইত্যাদি সরবরাহ করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়া। এছাড়া শিক্ষা অফিসের লোকজন প্রায় সময়ই শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এসবের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললে তাদের শোকজের ভয় দেখানো হয় বলেও অভিযোগে উল্লেখ্য করা হয়।

বাঙ্গালহাওলা সবুর আশরাফী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাওন হোসেন বলেন, অভিযোগের খবর পেয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার তাকে অফিসে ডেকে নিয়ে যায়। এ সময় তিনি বলেন, অভিযোগ দেয়ার আগে আমাকে জানাতে পারতেন। আমি তো এসব কিছুই জানি না। শিক্ষা অফিসারের কথায় শিক্ষক শাওন বলেন, আপনি হচ্ছেন শিক্ষা অফিসের প্রধান কর্মকর্তা। আপনাকে অবগত না করিয়ে এসব কাজ করে কীভাবে? অভিযুক্ত তিন শিক্ষকের মধ্যে কালীগঞ্জ পৌর এলাকার ঘোনাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জেসমিন মুঠোফোনে বলেন, কারা অভিযোগ করেছেন আমার জানা নেই। আমার জানা মতে, কারো সঙ্গে আমার কোনো শত্রুতা নেই। তবে আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য নয়।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আঞ্জুমান আরার বক্তব্য নিতে অফিসে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। অফিসের তথ্য মতে, তার ছেলে ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তিনি অফিস থেকে ছুটি নিয়ে হাসপাতালে ছেলের সঙ্গে আছেন। তবে তিনি মুঠোফোনে বলেন, অভিযোগের ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। অভিযোগের কপি আগে হাতে পাই, তারপর অফিসে আসেন আপনার সঙ্গে কথা বলব।

উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুন্নাহার বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত সব অভিযোগ অসত্য। শিক্ষকদের সঙ্গে আমার কোনো খারাপ সম্পর্ক নেই। শিক্ষা ব্যবস্থা ঠিক রাখতে মাঝে মধ্যে তাদের সঙ্গে আমার ‘মুখ কালো’ করতে হয়। আর এটিওর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেক সময় কাজ করার ক্ষেত্রে এটিও আমাকে জানান না। পরে জানতে পারলে তিনি বিভিন্ন অজুহাত দেন।

অভিযোগের ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম ইমাম রাজী টুলু বলেন, শিক্ষা অফিসের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছি। কয়েকজন শিক্ষক একটি অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মাদরাসা শিক্ষকরাও অষ্টম গ্রেড পাবেন - dainik shiksha মাদরাসা শিক্ষকরাও অষ্টম গ্রেড পাবেন নেড়ি কুকুরের ভাষণে শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজি নিয়োগ বিত্তান্ত - dainik shiksha নেড়ি কুকুরের ভাষণে শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজি নিয়োগ বিত্তান্ত বাংলাদেশের পাঠ্যবই ভারতে ছাপাতেই হবে কেনো? - dainik shiksha বাংলাদেশের পাঠ্যবই ভারতে ছাপাতেই হবে কেনো? অধ্যক্ষ জুবাইদা রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান হচ্ছেন! - dainik shiksha অধ্যক্ষ জুবাইদা রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান হচ্ছেন! ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার : সেনাবাহিনী যা যা করতে পারবে - dainik shiksha ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার : সেনাবাহিনী যা যা করতে পারবে তিন ক্যাটাগরির গুণী শিক্ষক বাছাইয়ে নাম পাঠানোর আহ্বান - dainik shiksha তিন ক্যাটাগরির গুণী শিক্ষক বাছাইয়ে নাম পাঠানোর আহ্বান মাদকের গডফাদারদের ধরার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার - dainik shiksha মাদকের গডফাদারদের ধরার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার শিক্ষা প্রশাসনে বদলি আতঙ্কে নাহিদ-দীপু সিন্ডিকেটের ৯২ কর্মকর্তা - dainik shiksha শিক্ষা প্রশাসনে বদলি আতঙ্কে নাহিদ-দীপু সিন্ডিকেটের ৯২ কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033910274505615