রিজওয়ান ইসমাম তাসপি। জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন। জন্মের পর যে বয়সে অন্য শিশুরা হইচই, ছুটাছুটিতে মাতিয়ে তুলত পুরো বাড়ি সেখানে রিজওয়ান ছিল একেবারে ভিন্ন। জন্ম থেকেই চোখে না দেখা রিজওয়ান চুপচাপ থাকত সব সময়। রিজওয়ানের নিত্যসঙ্গী মায়ের মুখে শুনে শুনে পড়াশোনা করে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় সরকারি মুজিব কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন।
রিজওয়ান ইসমাম তাসপি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কেজি স্কুল রোড এলাকার মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া ও শাহনাজ পারভীন দম্পতির ছেলে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আট বছর বয়সে পড়ালেখা শুরু করে সে। বিভিন্ন সময় শারীরিক জটিলতার কারণে তার পড়ালেখায় নানা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। তবে সব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে মা শাহনাজ পারভীনের কাছ থেকে পড়া শুনে শুনে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন রিজওয়ান। তাসপির মা শাহনাজ পারভিন উত্তর চরকাঁকড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। তার একমাত্র ছেলে তাসপি, আরেকজন মেয়ে রয়েছে। তার নাম রেজবিন ইমরুল। সে এবার এলএলএম শেষ করেছে। এবার এইচএসসি পরীক্ষায় সরকারি মুজিব কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে।
রিজওয়ানের বাবা মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আমার সন্তানের ফলাফল পেয়ে আমি খুব খুশি। যারা তার পড়াশোনার পেছনে ভূমিকা রেখেছেন তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। সে যেন মানুষের মতো মানুষ হতে পারে সে জন্য দোয়া করবেন। রিজওয়ান বলেন, আমি শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় যুক্ত হতে চাই। সবাই দোয়া করবেন। সরকারি মুজিব কলেজের শিক্ষক নুর মোহাম্মদ বলেন, তাসপি খুব বুদ্ধিমান ছেলে। আমরা ক্লাসে যা পড়াতাম, সেগুলো সে মনোযোগ দিয়ে শুনত, আর রেকর্ড করে নিত। তার সাফল্যে আমরা সবাই খুশি।