দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: দারিদ্র্যের কারণে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন, পরিবারে ভাঙন, বাবা-মার নতুন পরিবারে জায়গা হয় না তাদের-এমন নানা কারণে দেশের ৩৪ লাখ শিশু পথে বাস করে। পথশিশুরা তাদের দৈনন্দিন জীবনে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। নিরাপত্তাহীনতা, খাদ্য, বাসস্থান, শিক্ষা, পুষ্টিকর খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, যৌন নির্যাতন ও শিশুশ্রমের শিকার তারা।
সোমবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর শিল্পকলার চিত্রশালায় 'দ্য কোয়ালিটি স্টাডি অন চিলড্রেন লিভিং ইন স্ট্রিট সিচুয়েশনস ইন বাংলাদেশ ২০২৪' প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ পায়।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও ইউনিসেফ বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে ‘চাইল্ড সেনসিটিভ সোশ্যাল প্রোটেকশন ইন বাংলাদেশ ফেইজ-২’ প্রকল্পের অধীনে গবেষণাটি পরিচালিত হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও সুইডিস ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট এজেন্সি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ধনী দেশেও পথশিশু আছে, তবে আমাদের প্রেক্ষাপট আলাদা। এই গবেষণা তাদের ভাগ্য উন্নয়নে পরিকল্পনা গ্রহণে আমাদের ভূমিকা রাখতে সহায়তা করবে। সরকারের একার পক্ষে সব শিশুর ভাগ্য উন্নয়ন সম্ভব নয়-উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'একেকটি মধ্যবিত্ত পরিবার যদি একজন পথশিশুর দায়িত্ব নেয়, তাহলে আমাদের চাওয়াটা অনেক দূর এগিয়ে নিতে পারব। আমরা যদি সুন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে এই পথশিশুদের স্বপ্ন দেখাতে পারি, তাহলে ওদের জীবন পালটে যেতে পারে। ওরাও ইতিবাচক আচরণ করতে পারে।'
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি এমপি বলেন, এই প্রতিবেদনে যে পথশিশুদের কথা বলা হয়েছে, এর তথ্যের ভিত্তি কী, তা জানতে হবে। কারণ ইউনিসেফের সহায়তায় এপিসি প্রজেক্টের আওতায় ৪১টি জেলায় ১ হাজার ৭৫০টি হাবের মধ্যে পথশিশুদের জন্য ২১টি হাব রয়েছে। ইউনিসেফ বাংলাদেশ-এর প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, পথশিশুরা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তাদের অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়। তিনি তাদের শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও কারিগরি শিক্ষার এবং সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় আনার কথা বলেন।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক সচিব নাজমা মোবারেক, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. খায়রুল আলম শেখ, ইউনিসেফ উপপ্রতিনিধি এমা ব্রিগহাম, শিশু সুরক্ষার প্রধান নাটালি ম্যাক্কলি, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন অব বাংলাদেশের টিমলিডার এনরিকো লরেঞ্জোন প্রমুখ। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সিএসপিবির ফেইজ-টু জাতীয় প্রকল্প পরিচালক ও যুগ্মসচিব মো. ছরোয়ার হোসেন। পাশাপাশি জাতীয় চিত্রশালা গ্যালারি ৭-এ চিত্রগ্রাহক সেতুর তোলা আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে পথশিশুদের জীবনযাপন, তাদের স্বপ্ন ইত্যাদি তুলে ধরা হয়েছে। অতিথিরা আলোকচিত্রগুলো ঘুরে দেখেন।