রংপুর সিটি করপোরেশনের দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছেন জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা।
মঙ্গলবার রাতে রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন ফলাফল ঘোষণা করেন।
লাঙ্গল প্রতীকে মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা পেয়েছেন ১ লাখ ৪৬ হাজার ৭৯৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আমিরুজ্জামান প্রার্থী হাতপাখা প্রতীকে পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৮৯২ ভোট।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া রয়েছেন চতুর্থ অবস্থানে। তৃতীয় অবস্থানে আছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. লতিফুর রহমান।
৪ লাখ ২৬ হাজার ৪৬৯ ভোটের মধ্যে ২ লাখ ৮০ হাজার ৯৭২ জন ভোট দিয়েছেন। ভোট প্রদানের হার ৬৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ। সে হিসাবে জমানত রক্ষার জন্য প্রয়োজন ৩৫ হাজার ১২২ ভোট।
আব্দুল বাতেন জানান, ২২৯টি কেন্দ্রের ফলাফলে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন এক লাখ ৪৬ হাজার ৭৯৮ ভোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মো. আমিরুজ্জামান হাতপাখা প্রতীকে ৪৯ হাজার ৮৯২ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. লতিফুর রহমান হাতি প্রতীকে ৩৩ হাজার ৮৮৩ ভোট এবং আওয়ামী লীগের প্রার্থী হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া নৌকা মার্কায় পেয়েছেন ২২ হাজার ৩০৬ ভোট।
মোস্তফা রংপুর সিটি করপোরেশনের দ্বিতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন।
সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ২২৯ ভোটকেন্দ্রে টানা ভোটগ্রহণ হয়। কোনো ধরনের সহিংসতা ছাড়াই ভোট সম্পন্ন হয়। তবে ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর নগরীর আমাশু প্রগতি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র এলাকায় দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকরা সহিংসতায় জড়ায়।
ভোটের নির্ধারিত সময়ের পরেও কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটারের লাইন দেখা গেছে। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা বলেছেন, যারা বিকাল সাড়ে ৪টার আগে ভোটের লাইনে এসে দাঁড়িয়েছেন তারা ভোট দিতে পেরেছেন।
ভোট গ্রহণ শেষে এককদল লোক একটি বিজিবির গাড়িতে আগুন দিয়েছে। এই ঘটনায় এক কাউন্সিলর প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ভোটাররা জানান, সকালে ভোট শুরু হওয়ার পর তীব্র শীতের কারণে ভোটারের উপস্থিতি কিছুটা কম ছিল। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটের লাইন বড় হতে থাকে। দুপুরের পর বেশ কিছু কেন্দ্রে ভোটারের বড় লাইন দেখা যায়।
ইভিএমে ভোট গ্রহণের কারণে কিছুটা দেরির অভিযোগ করেন ভোটাররা। কয়েকটি কেন্দ্রে ইভিএম মেশিনে ত্রুটি দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে সারিয়ে তোলা হয় বলে জানান নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ভোটের তথ্য
- মেয়র পদে ৯ প্রার্থী; ৩৩টি সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ১৮৩ জন এবং ১১টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর পদে ৬৮ জন প্রার্থী; ৩০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
- ভোটার ৪ লাখ ২৬ হাজার ৪৬৯ জন; পুরুষ ২ লাখ ১২ হাজার ৩০২ ও নারী ২ লাখ ১৪ হাজার ১৬৭ জন।
- ২২৯টি কেন্দ্রে ভোটকক্ষ ১৩৪৯টি।
- রিটার্নিং অফিসার- নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ইসির যুগ্মসচিব আব্দুল বাতেনের সঙ্গে আছেন ১১ জন সহকারী রিটার্নিং অফিসার।
- প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ২২৯ জন; সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এক হাজার ৩৪৯ জন; দুই হাজার ৬৯৮ জন মোট পোলিং অফিসার।
- গুরুত্বপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে চারজন অস্ত্রসহ পুলিশ (একজন এসআই/এএসআই ও তিন জন কনস্টেবল), দুই জন অস্ত্রসহ অঙ্গীভূত আনসার ও ১০ জন লাঠিসহ অঙ্গীভূত আনসার/ভিডিপি সদস্য (চারজন মহিলা ও ছয়জন পুরুষ) মোতায়েন করা হয়।
- নির্বাহী হাকিম: প্রতিটি ওয়ার্ডে একজনসহ ৪৭ জন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের সঙ্গে দায়িত্বে নিয়োজিত।
- বিচারিক হাকিম: ১৬ জন।
- প্রতিটি কেন্দ্রে ১৪-১৫ জন করে নিরাপত্তা সদস্য।
- তফসিল: ৭ নভেম্বর সময়সূচি ঘোষণা। মনোনয়নপত্র জমার শেষ তারিখ ২৯ নভেম্বর; বাছাই ১ ডিসেম্বর ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ছিল ৮ ডিসেম্বর।