বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘোষিত এক দফা দাবিতে অসহযোগ আন্দোলনে পুরান ঢাকার সদরঘাট, রায়সাহেব বাজার, তাঁতীবাজার এলাকায় ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। দফায় দফায় এলাকায় পুলিশ ও ছাত্রলীগের কর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ চলছে। সদরঘাট, বাংলাবাজার, পাটুয়াটুলী, রায়সাহেব বাজার, তাঁতীবাজার ও এর আশেপাশের গলি ও প্রধান সড়কে অবস্থান নেয়।
রোববার (৪ আগস্ট) সকালে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। পুরান ঢাকার সদরঘাট, বাংলাবাজার মোড় এলাকায় আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় বাংলাবাজার, ইসলামপুর, পাটুয়াটুলি, সদরঘাট এলাকার সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। একই সঙ্গে তারা ঢাকার রায়সাহেব বাজার মোড় ও তাঁতীবাজার মোড়ে অবস্থান নেয়। সোয় এগারটার দিকে তারা ঢাকার সিএমএম আদালতের সামনের রাস্তায় পার্ক করা পুলিশের গাড়ি উল্টো তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। বিভিন্ন স্থানে টায়ার দিয়ে আগুন জ্বালায়।
এ সময় একদফার সমর্থনে অর্ধশতাধিক বিএনপিপন্থি আইনজীবী ঝটিকা মিছিল করে। তারা আইনজীবী সমিতির সামনে থেকে ঢাকার সিএমএম আদালতের সামনে বিক্ষোভ করে। তারা মিছিল নিয়ে দ্রুত আদালত চত্বর ত্যাগ করেন।
শতাধিক পুলিশ সিএমএম আদালত প্রাঙ্গণে অবস্থান নিয়ে এর প্রধান ফটকে তারা দিয়ে দেয়। দুপুর পৌনে ১২টায় তারা রায়সাহেব বাজার পুলিশ বক্স প্রথমে ভাঙচুর ও পরে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। পুলিশ এ সময় সিএমএম কোর্ট ছেড়ে ঢাকার সিজেএম কোর্টের সামনে প্রধান সড়কে অবস্থান নেয়। এ সময় কয়েকবার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে সিএমএম আদালতের গেট খুলে ভেতরে প্রবেশ করেন তারা। এ সময় আদালতের সামনে পার্ক করা পুলিশের পাঁচটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
পুলিশ আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ছোড়ে। আন্দোলকারীরা দ্রুত ফের প্রধান সড়কে অবস্থান নেন। খবর পেয়ে প্রায় আধাঘন্টা পর শতাধিক আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবী লাঠি মিছিল করে। কিন্তু তার আগেই আন্দোলনকারীরা স্থান ত্যাগ করেন।
এর আগে সকাল থেকেই দলে দলে আন্দোলনকারীরা পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার, তাঁতিবাজার মোড়ে জড়ো হতে থাকেন। একই সঙ্গে ছাত্রলীগের কর্মীরাও অবস্থান নেন। তাদের মধ্যে থেমে থেমে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে।
এদিকে আতঙ্কে তাঁতিবাজার, ইসলামপুরসহ আশেপাশের এলাকাগুলোতে সব দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। এসব এলাকায় বন্ধ রয়েছে যানবাহন। পুরান ঢাকায় দু-একটা রিকশা ছাড়া অন্য কোনো যানবাহন চলতে দেখা যায়নি। পুরান ঢাকার অন্যতম ব্যস্ততম বাংলাবাজার মোড়ও অনেকটাই ফাঁকা। নেই অন্যান্য দিনের মতো যানজটের চিত্র। তবে সংঘর্ষে চারদিকে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিভিন্ন স্থানে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকলেও তারা ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছেন। তাদের উত্তেজিত কিংবা মারমুখি ভুমিকায় দেখা যায়নি।