রাজধানীর ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো. জসিম উদ্দীন আহম্মেদ অনিয়ম-দুর্নীতি ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের চলবে বলে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। সোমবার (১৩ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে মো. জসিম উদ্দীনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
এর আগে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ৪ জুন পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন, ব্যাপক আর্থিক দুর্নীতি ও অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগে ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ মো. জসিম উদ্দীন আহম্মেদসহ ৩ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
অন্য দুজন শিক্ষক হলেন মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক তৌফিক আজিজ চৌধুরী, বাংলা বিভাগের শিক্ষক তরুণ কুমার গাঙ্গুলী। তাদের ৩ মাসের জন্য সাময়িক বরখাস্ত করে কলেজের গভর্নিং কমিটি। পাশাপাশি কলেজের অধ্যক্ষ মো. জসিম উদ্দীন আহম্মেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর আবেদন করে কলেজের গভর্নিং বডি।
কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি সৈয়দ রেজাউর রহমান, অধ্যক্ষ জসিম উদ্দীন আহম্মেদ, অভিভাবক সদস্য কবির আহমদ ভূইয়া, মেজবাউর রহমান রতন, জসীম উদ্দিন আহমদ, আব্দুস সত্তার খন্দকার, শিক্ষক প্রতিনিধি সেগুপ্তা ইসলাম, বজলুর রহমান সাইফুল, মোয়াজ্জেম হোসেনের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এরপর সাময়িক বরখাস্ত আদেশের বিরুদ্ধে রিট দায়ের করলে হাইকোর্টে জসিম উদ্দীনের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করেন। এরপর হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন কলেজের গভর্নিং বডি। অন্যদিকে পূর্ণাঙ্গ বেতন-ভাতা পেতে আবেদন করেন জসিম উদ্দীন আহম্মেদ।
আইন অনুযায়ী ৬০ দিনের মধ্যে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। কিন্তু ৬০ দিন পেরিয়ে গেলেও অধ্যক্ষ জসিম উদ্দীনের বিরুদ্ধে তদন্ত করে চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আর বরখাস্তকালীন মূল বেতনের অর্ধেক খোরাকি ভাতা হিসেবে দেওয়া হয়। এ কারণে তিনি পূর্ণাঙ্গ বেতন-ভাতা চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন।
চেম্বার আদালত হয়ে এসব বিষয়ে আজ আপিল বিভাগে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানি শেষে আদালত হাইকোর্টের আদেশের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন। পাশাপাশি মো. জসিম উদ্দীনের বিরুদ্ধে তদন্ত চলবে বলে আদেশ দিয়েছেন। এর ফলে আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ মো. জসিম উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ স্থগিত থাকবে। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের তদন্ত চলবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
বর্তমানে আইডিয়াল কলেজে প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। তাদের অধিকাংশই উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থী। আটটি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) পড়ানো হয়; যেখানে শিক্ষার্থী পাঁচ শতাধিক।