দৈনিকশিক্ষাডটকম, জামালপুর: বকশীগঞ্জে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিএ/বিএসএসের উন্মুক্ত পরীক্ষায় উন্মুক্ত নকলের তথ্য মিলেছে। পরীক্ষার্থীরা অবাধে বইয়ের পাতা দেখে দেখে উত্তরপত্রে লিখলেও প্রতিরোধে তেমন কোনো তৎপরতা চোখে পড়েনি। কলেজের প্রবেশদ্বারে নকলমুক্ত পরীক্ষা কেন্দ্র লেখা সংবলিত ব্যানার টানানো থাকলেও খাতেমুন মঈন মহিলা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলমান বিএ/বিএসএসের ৪র্থ সেমিস্টারের ইতিহাস-৩ পরীক্ষায় গত শুক্রবার এমন চিত্র দেখা গেছে।
খাতেমুন মঈন মহিলা ডিগ্রি কলেজে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিগ্রির বিএ/বিএসএস পর্যায়ে গত ৩ নভেম্বর পরীক্ষা শুরু হয়। বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় দুই শতাধিক পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। প্রতি শুক্র ও শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা এবং দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, পরীক্ষার্থীরা অবাধে বইয়ের পাতা দেখে দেখে উত্তরপত্রে লিখছে। কিন্তু তা প্রতিরোধে তেমন কোনো তৎপরতা চোখে পড়েনি। কেন্দ্রটির দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ঘটেছে এসব। পরীক্ষার কেন্দ্রে এক প্রতিবেদককে প্রথমে ঢুকতে দেখে এক কর্মচারী এগিয়ে এসে পরীক্ষায় দায়িত্বপ্রাপ্তদের দোহাই দিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেন। সংবাদকর্মী পরিচয় পাওয়ার পর কেন্দ্রে প্রবেশের অনুমতি মিললেও পরীক্ষার হলে প্রবেশের অনুমতি মেলেনি। দীর্ঘ সময় অফিস কক্ষে বসে থাকার পর কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্ডিনেটর সহযোগী অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম মিল্লাতের সঙ্গে পরীক্ষার হল ঘুরে দেখার অনুমতি মেলে। এসময় অনেকের খাতার নিচে বই এর ছেঁড়া পাতা দেখা যায়।
পরিদর্শকের দায়িত্বে থাকা একজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ প্রতিবেদককে বলেন, এখানে কী ধরনের পরীক্ষার্থীরা অংশ নিছে। আপনি থাকায় তাদের সমস্যা হচ্ছে, তাই চলে গেলে ভালো হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরীক্ষার্থী বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা হলে সুযোগ-সুবিধা দেয়ার জন্য প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার পরপরই ১০০ টাকা করে দিতে হয়। টাকা না দিতে চাইলে পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণও করা হয়।
বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনোনীত ট্যাগ অফিসার উপজেলা দারিদ্র্য বিমোচন কর্মকর্তা মো. নূরুন্নবী বলেন, বাউবির পরীক্ষা এই কেন্দ্রে স্বাভাবিকভাবেই চলছে। এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা হলে সুযোগ-সুবিধা দেয়ার জন্য প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়ে কেন্দ্র সচিব কলেজের অধ্যক্ষ মো. বজলুল করিম তালুকদার বলেন, এ অভিযোগ সত্য নয়।