আগামী ১ জানুয়ারি বই উৎসব। প্রতি বছরের মতো এবারও বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়ার পরিকল্পনা আছে সরকারের। এজন্য বই উৎসব আয়োজনের জোর প্রস্তুতিও চলছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, প্রাথমিকের সব বই ইতোমধ্যে দেশের ৪৯৫টি উপজেলায় পৌঁছেছে। মাধ্যমিকেরও অধিকাংশ পৌঁছে গেছে। এসব বই যথাসময়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হবে। তবে নতুন বছরে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের অপেক্ষায় থাকা অষ্টম ও নবম শ্রেণির কিছু বই ছাপার কাজ এখনো চলছে।
পাঠ্যবই মুদ্রণ ও বিতরণ তদারকির দায়িত্বে থাকা জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, এবারের বই বিতরণের প্রস্তুতি গত কয়েকবছরের থেকে ভালো। আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে সব বই উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে যাবে। বছরের প্রথম দিনই বই পাবেন শিক্ষার্থী।
যদিও এনসিটিবিরই অপর এক সূত্র দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানিয়েছে, অষ্টম ও নবমের কিছু বই হয়তো ৩০ ডিসেম্বরের আগে উপজেলাগুলোতে পাঠানো সম্ভব হবে না। সেগুলো বছরের শুরুতে পাঠানো হতে পারে।
২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের ৩ কোটি ৮১ লাখ ২৭ হাজার ৬৩০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রায় ৩১ কোটি বই ছাপা হওয়ার কথা। এগুলোর মধ্যে মাধ্যমিক স্তরের মোট বই ১৮ কোটি ৬১ লাখ ১ হাজার ২০৬টি। আর প্রাথমিক স্তরের প্রায় ৯ কোটি ৭৫ লাখ। এগুলোর মধ্যে প্রথম, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই আছে ৫ কোটি ৩৮ লাখ ৩ হাজার ৪২৩। দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির নতুন শিক্ষাক্রমের বইয়ের সংখ্যা ৩ কোটি ৩৬ লাখ ১ হাজার ২৭৪। আর প্রাক-প্রাথমিকের ৬১ লাখ ৯৩ হাজার ৮৭৮।
এছাড়া ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৬ কোটি ৪৫ লাখ ৪৮ হাজার ৩০৮ কপি, সপ্তম শ্রেণির ৪ কোটি ৪৫ লাখ ৫৭ হাজার কপি, অষ্টম শ্রেণির জন্য ৫ কোটি ৩৪ লাখ ৮৪ হাজার ২৭১ কপি এবং নবম শ্রেণির ৫ কোটি ছয় লাখ ৮৪ হাজার ৫৭৩ কপি বই ছাপানোর কথা।
এনসিটিবি সূত্র জানিয়েছে, গত সোমবার পর্যন্ত প্রাথমিকের সব বই এবং মাধ্যমিকের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির সব বই উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। আর নতুন শিক্ষাক্রমের অষ্টম শ্রেণির ৬০ শতাংশ ও নবম শ্রেণির ৩৫ শতাংশ বই পাঠানো সম্ভব হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম, নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হবে।
বছরের প্রথম দিন সব বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌছানো প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমে অষ্টম ও নবম শ্রেণির কিছু বই ছাপার কাজ এখনো চলছে, যা দ্রুত শেষ হয়ে যাবে। যে প্রেসগুলো ওই দুই শ্রেণির বই ছাপাচ্ছে তাদের সক্ষমতা ব্যাপক। বছরের শুরুতে সময় মতো বই পাবেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে আগামী ১ জানুয়ারি বই উৎসবের আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। গত কয়েক বছরের মতো এবারও রাজধানী ঢাকায় মাধ্যমিকের বই উৎসব হচ্ছে না। এবার এই উৎসব হবে কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার সোয়াগঞ্জ তোফাজ্জল আহমেদ চৌধুরী স্কুল অ্যান্ড কলেজে। ওই দিন সকালে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে প্রাথমিকের বই উৎসব হবে রাজধানীর মিরপুরের ন্যাশনাল (সকাল-বিকাল) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
তবে গত কয়েকবছরের ধারাবাহিকতায় এবারও কেন্দ্রীয় উৎসবের একদিন আগে সরকার প্রধান শেখ হাসিনা ঘরোয়া অনুষ্ঠানে বই উৎসবের অনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করবেন কী-না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের আগে ২০ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন প্রধানমন্ত্রী। ৩০ ডিসেম্বর তিনি গোপালগঞ্জ এবং মাদারীপুর জেলা সফর করবেন বলে জানা গেছে।
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।