নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে ফেসবুকে অপপ্রচার করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। দুই মাস আগে দেয়া নির্দেশ অনুযায়ী মামলা করবে এনসসিটিবি। অভিযুক্ত ঢাবির ওই অধ্যাপকের নাম ড. এ এস এম আমানুল্লাহ। তিনি বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের নেতা। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে (এনসিটিবি) বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে এ নির্দেশনা দিয়ে দুই মাস আগে চিঠি পাঠানো হয়েছে এনসিটিবির চেয়ারম্যানকে।
এনসিটিবির একটি সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, গত মার্চ মাসে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এনসিটিবির কর্মকর্তারা বলছেন, তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার বিষয় এনসিটিবির কোনো আইনি জটিলতা আছে কি না তা যাচাই বাছাইয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সংস্থাটির আইন উপদেষ্টাকে। সে মতামতের ওপরভিত্তি করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিটিবির সচিব নাজমা আখতার সোমবার বিকেলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মামলা দায়ের হয়েছে কি না তা অফিসের রেকর্ড দেখে বলতে হবে। খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে জানাতে পারবো।
এদিকে সমাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক নিয়ে পোস্ট করে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করায় পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন অধ্যাপক নাম ড. এ এস এম আমানুল্লাহ। মুচলেকা দেয়ার শর্তে তার ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন মঞ্জুর করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট।
গতকাল রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব আলী সিনেট ভবনে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের এক সভায় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিনের একটি প্রতিবেদন সভায় উত্থাপন করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহর ফেসবুক পেজে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক নিয়ে মনগড়া ও ভিত্তিহীন পোস্টের বিষয়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিনের একটি প্রতিবেদন সভায় উত্থাপন করা হয়। সভা মনে করে, এটি পাঠ্যপুস্তক, সরকারের শিক্ষানীতি ও ভাবমূর্তিকে ক্ষুন্ন করার একটি অপপ্রয়াস। অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ ইতোমধ্যে তার কৃতকর্মের জন্য দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। ভবিষ্যতে এধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ড ও আচরণ করবেন না মর্মে লিখিত মুচলেকা দেয়ার শর্তে তার ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন সভায় মঞ্জুর করা হয়েছে।
এদিকে সোমবার দৈনিক শিক্ষাডটকমের সঙ্গে কথা হয় অভিযুক্ত ওই অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহর। তিনি জানান, ফেসবুকে আমি কোনো স্ট্যাটাস দেই নি। আমি ঢাকা মেডিকেল কলেজের এক অধ্যাপকের পোস্ট শেয়ার করেছি মাত্র। পরে আমি শেয়ার দেয়া স্ট্যাটাসটি মুছে ফেলে ক্ষমা প্রার্থনা করেছি।
তিনি আরো জানান, এই মুহুর্তে আমি দেশের বাহিরে অবস্থান করছি। তাছাড়া সিন্ডিকেট সভার যে সিদ্ধান্ত, সেটি আমার কাছে এসে পৌঁছায়নি এবং এ বিষয়ে কিছু জানিও না। জানার পর এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারবো।