নতুন শিক্ষাক্রমে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্যবইয়ে ইতিহাস বিকৃতি, সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক বিষয়বস্তু, এলজিবিটিকিউ (নারী ও পুরুষ সমকামী, উভকামী ও রূপান্তরকামী) প্রোমট করার অভিযোগ তুলে তা প্রত্যাখ্যান করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের একাংশ। নতুন শিক্ষাক্রম প্রত্যাখ্যান করে রাজধানীর শাহবাগে তাদের ‘লাল কার্ড সমাবেশ’ পণ্ড হয়েছে। পুলিশ ও ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের সমাবেশে বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে সমাবেশটি শুরু হওয়ার আগেই বাধার মুখে পড়ে। তবে বাধা দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ছাত্রলীগ ও পুলিশ। এসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গণমাধ্যম কর্মীদের মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
বাধাগ্রস্থ হয়ে কর্মসূচিতে আসা শিক্ষার্থীরা শাহবাগ এলাকা ত্যাগ করেন। তবে এ ঘটনায় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
লাল কার্ড সমাবেশের অন্যতম আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী ও ইসলামি ছাত্র আন্দোলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি জামালুদ্দীন মুহাম্মদ খালিদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে শাহবাগে লাল কার্ড কর্মসূচিতে অংশ নিলে পুলিশ ও ছাত্রলীগ কর্মীরা আমাদের ব্যানার কেড়ে নিয়ে, আমাদের কর্মসূচিতে বাধা দেয়। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে আমাদের শিক্ষার্থীদের হাতাহাতি হয়। তবে কেউ গুরুতর আহত হয়নি।
লালকার্ড সমাবেশ নিয়ে পরবর্তী কর্মসূচি আছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি। পরে কর্মসূচি দেয়া হলে জানিয়ে দেয়া হবে।
এদিকে সমাবেশ পণ্ড হয়ে যাবার পর ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা স্লোগান দিতে থাকেন। পরে তাঁরা গান-বাজনাতে মেতে উঠেন। এসময় সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতকেও সেখানে দেখা যায়।
জানতে চাইলে তানভীর হাসান সৈকত দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি এর আগে পেছনে কি হয়েছে জানি না। শিল্পচর্চার মুক্তাঙ্গন হলো শাহবাগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এখানে সাংস্কৃতিক চর্চা করছে এর খবর পেয়ে আমি এখানে এসেছি। মৌলবাদের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ সবসময়ই থাকবে, আর ছাত্রলীগ এমন প্রতিবাদের সঙ্গে সবসময়ই থাকবে।
শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক আশরাফুজ্জামান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমরা এখানে কাউকে আন্দোলন করতে দেখিনি। আর ব্যানর কেড়ে নেয়ার মতো কোন ঘটনায় ঘটে। আমরা এতটুকুই জানি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এখানে তাদের কর্মসূচি পালন করছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
প্রসঙ্গত, গতকাল সোমবার (১৬ জানুয়ারি) লাল কার্ড সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও সঙ্গত কারণ দেখিয়ে তা পিছিয়ে মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়টি জানানো হয়।