দৈনিকশিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: নতুন শিক্ষাক্রমের প্রশংসা করে দেশের বিশিষ্টজনরা বলছেন, জাতীয় শিক্ষাক্রমকেও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী কব্জা করতে চাইছে। তারা বর্তমান শিক্ষাক্রমের বিরোধিতা করে আন্দোলনে নেমেছে। এই আন্দোলনে সরকারকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শক্তিকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
শনিবার (২৭ জানুয়ারি) সকালে সিরডাপ মিলনায়তনে ‘নির্বাচন, সহিংসতা মানবাধিকার : উত্তরণের পথ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তারা এই আহ্বান জানান। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ আয়োজিত এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
’৭৫ পরবর্তী সময়ে যে কোনো সময়ের চেয়ে বর্তমান কারিকুলাম সবচেয়ে আধুনিক ও সময়োপযোগী উল্লেখ করে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আহ্বায়ক শাহরিয়ার কবির বলেন, সেখানেও যে সাম্প্রদায়িকতা ঢোকানো হচ্ছে। এগুলো কীভাবে মোকাবিলা করব? কওমী মাদ্রাসায় যেভাবে পড়ানো হচ্ছে তা নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে। বঙ্গবন্ধুকে তারা জাতির পিতা মানে না। জাতীয় সংগীত গাইতে তারা রাজি নয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলনেও তাদের আপত্তি। সেখান থেকে লাখ লাখ শিক্ষার্থী বেরিয়ে আসছে। তারা বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন পদে বসছেন। ব্র্যাকের মতো একটি আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষক কীভাবে বলেন, কারিকুলাম তার ধর্মের পরিপন্থি। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে বাদ দিয়েছেন। কিন্তু এই শিক্ষক কীভাবে এই প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পেল?
সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বই থেকে ‘শরীফার গল্প’ এর পৃষ্ঠা ছিড়ে আলোচনায় আসা ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিচ্যুত শিক্ষক আসিফ মাহতাবকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি। পাশাপাশি নতুন কারিকুলাম বাদ দেয়ার আন্দোলনে সরকারকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান।
বর্তমান শিক্ষা কারিকুলামের প্রশংসা করে ভোরের কাগজ সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, গত কয়েকদিন ধরে শিক্ষা কারিকুলাম নিয়ে প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী যে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে তার একটি ইতিবাচক দিকও আছে। এতে বোঝা যাচ্ছে সরকার সঠিক পথেই যাচ্ছে। গত শুক্রবার বায়তুল মোকাররমে তারা সরকারের বিরুদ্ধে যে বিষোদগার করেছে, তারা বলেছে, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইট খুলে ফেলা হবে। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে।
সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য সরকার যে শিক্ষাক্রম করেছে তা অসাধারণ হয়েছে। কিন্তু এখন সেই শিক্ষাক্রম বাতিলের নামে আন্দোলনে নেমেছে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী। আমরা সংখ্যালঘুদের কথা বলছি কিন্তু তৃতীয় লিঙ্গের ওরা আরো বেশি সংখ্যালঘু। তাদের অধিকারের কথা, তাদের কথাও তো আমাদের বেশি করে বলতে হবে। সরকার তো তাদের স্বীকৃতি দিয়েছে।