নম্বর কারসাজিতে দুই ছাত্রীর ‘ঈর্ষণীয়’ ফল - দৈনিকশিক্ষা

কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজনম্বর কারসাজিতে দুই ছাত্রীর ‘ঈর্ষণীয়’ ফল

দৈনিকশিক্ষাডটকম মানিকগঞ্জ |

দৈনিক শিক্ষাডটকম মানিকগঞ্জ : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলে তাদের উপাদানকল্প (স্বীকৃত) মানিকগঞ্জের কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজের দুই শিক্ষার্থীর সাফল্য ঈর্ষণীয়। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, তাদের দেওয়া নম্বরে দু’জনই অকৃতকার্য হয়েছেন। পরে ঢাবি কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে দুই শিক্ষার্থীর মূল নম্বরপত্রে ব্লেড দিয়ে কেটে প্রয়োজনীয় নম্বর বসানোর প্রমাণ পায়। এর পর সূচনা পারভীন ও কাজী মাইশা জয়নবের ফল স্থগিত করা হয়। একই সঙ্গে জালিয়াতিতে জড়িতদের শনাক্তে কলেজে চিঠি দেয়। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় তাদের শিক্ষকদের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে প্রতিবেদন দিয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা সাব-কমিটি ও কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজের পৃথক তদন্তে এসব তথ্য উঠে এসেছে। জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা তদন্ত করে দেখেছি– এ জালিয়াতিতে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের কারও জড়িত থাকার সুযোগ নেই। কলেজ থেকেই এটি হয়েছে। হয়তো আগেও এমন করে তাদের কেউ কেউ অথবা বড় চক্র পার পেয়ে গেছে। বিষয়টি গুরুতর হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দায়িত্ব দিয়েছি। তারাই চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেবে।’

গত ১৬ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো কলেজ কর্তৃপক্ষের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিক্ষকরা চাইলে অতিরিক্ত নম্বর দিয়ে পরীক্ষার টেবিলেই ছাত্রীদের পাস করাতে পারতেন, জালিয়াতির প্রয়োজন ছিল না। তা ছাড়া পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়কের কাছে সংরক্ষিত টেবুলেশন শিটে সব ঠিক রয়েছে। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো নম্বরপত্রে জালিয়াতি হয়েছে। এ বিষয়ে কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. জাকির হোসাইন বলেন, ‘গত ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চিঠি দেয়। এর পর আমরা তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। নম্বর জালিয়াতিতে আমাদের শিক্ষকদের সম্পৃক্ততা আমরা পাইনি।’

জানা গেছে, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে ২০ সেপ্টেম্বর কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজের তিন পরীক্ষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসে চিঠি দিয়ে জানান, কলেজের পেশাগত এমবিবিএস পরীক্ষায় দুই ছাত্রী তাদের দেওয়া নম্বরে কোনো বিষয়ে পাস করেননি। কিন্তু ঢাবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস থেকে প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলাফলে তারা ঈর্ষণীয় নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। সূত্র জানায়, এ চিঠি পেয়ে নড়েচড়ে বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ফাইলগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা পরিষদের সাব-কমিটিতে পাঠায়। সাব-কমিটিতে ছিলেন তৎকালীন আইন অনুষদের ডিন মো. রহমতুল্লাহ, জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন ইমদাদুল হক, প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহলুল হক চৌধুরী।

সাব-কমিটি পর্যালোচনা করে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ২০ সেপ্টেম্বর পরীক্ষা কমিটির ১৫ সদস্যের সঙ্গে বৈঠক করে। পরীক্ষা কমিটির শিক্ষকরা মতামত দেন, পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়কের কাছে যে নম্বরপত্র, তার সঙ্গে ঢাবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে জমা নম্বরপত্রের মিল নেই। কলেজ শিক্ষকদের দেওয়া নম্বরে দুই শিক্ষার্থী পাস করেননি। কিন্তু ঘষামাজার পর পাস নম্বর দেখা যায়। তদন্তে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সূচনা পারভীনের ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে র মার্চে অনুষ্ঠিত প্রথম পেশাগত এমবিবিএস পরীক্ষায় অ্যানাটমি পেপার-২ গ্রুপ ‘এ’-এর ফরম্যাটিভ, ওরাল ও প্রাক্টিক্যাল, ফিজিওলজি ওরাল ও বায়োকেমিস্ট্রির প্রাকটিক্যাল বিষয়ের মূল নম্বরপত্রে ঘষামাজাসহ ওভাররাইটিং পাওয়া যায়। একই সময়ে দ্বিতীয় পেশাগত এমবিবিএসে মাইশা জয়নবের ফরেনসিক মেডিসিন ওরাল বিষয়ের নম্বরপত্রেও সূক্ষ্ম ঘষামাজা রয়েছে।

সূত্র জানায়, পরীক্ষা কমিটি কলেজ প্রশাসনের কাছে নম্বর জমা দেওয়ার পর কোনো কর্মচারীর যোগসাজশে ঘষামাজা করে মূল নম্বর পরিবর্তন করা হয়েছে। কলেজের নার্স ও অফিসের কর্মচারীদের যোগসাজশে বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এটি করা হয়েছে। শিক্ষকরা নম্বরপত্র খামে ভরার জন্য কর্মচারীদের কাছে জমা দেন। ওই সুযোগে প্রতারক চক্রের সদস্যরা ব্লেড দিয়ে মূল নম্বরপত্র কেটে নতুন করে পাস করার জন্য প্রয়োজীয় নম্বর বসিয়েছে। 

বিষয়টি টের পেয়ে কাজী মাইশা পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ও ফরেনসিক বিভাগের প্রধানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনেন। অভিযোগে তিনি বলেন, শিক্ষকের ইঙ্গিতপূর্ণ আহ্বানে সাড়া না দেওয়ায় তাঁকে ফেল করানোর হুমকি দিয়েছিলেন। তিনি জালিয়াতি করার বিষয়ে ফের পরীক্ষা দেওয়ার আবেদন এবং তদন্তে যে সিদ্ধান্ত আসবে মেনে নেওয়ার কথা জানান। পরে কাজী মাইশাকে তদন্ত পর্যন্ত পরবর্তী পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়।

ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ঘেরাও শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ ঘেরাও শিক্ষার্থীদের ঘুষকাণ্ডে গণধোলাই খাওয়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সেই কর্মকর্তা বললেন সব কয়টারে গু*লি কইরা মা*রমু - dainik shiksha ঘুষকাণ্ডে গণধোলাই খাওয়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সেই কর্মকর্তা বললেন সব কয়টারে গু*লি কইরা মা*রমু কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে জাবি ছা*ত্রীর মৃত্যু: বিচারের দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা - dainik shiksha জাবি ছা*ত্রীর মৃত্যু: বিচারের দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা পাঁচ বিসিএসে ১৮ হাজার প্রার্থী নিয়োগ দেবে সরকার - dainik shiksha পাঁচ বিসিএসে ১৮ হাজার প্রার্থী নিয়োগ দেবে সরকার পবিপ্রবিতে র‍্যা*গিংয়ে হাসপাতালে ৩ শিক্ষার্থী, বহি*স্কার ৭ - dainik shiksha পবিপ্রবিতে র‍্যা*গিংয়ে হাসপাতালে ৩ শিক্ষার্থী, বহি*স্কার ৭ কওমি-আলিয়া মাদ্রাসার ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে - dainik shiksha কওমি-আলিয়া মাদ্রাসার ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003986120223999