দিনভর নানামুখি নাটকীয়তা শেষে চলমান আন্দোলন স্থগিত করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের আন্দোলরত শিক্ষার্থীরা। সিজিপিএ শর্ত শিথিল করে মানোন্নয়ন পরীক্ষা নিয়ে পরবর্তী বর্ষে প্রমোশনের ‘দাবি পূরণের আশ্বাসে’ আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
গতকাল রোববার রাতে দৈনিক আমদের বার্তাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন আন্দোলনের সমন্বয়ক ও ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী শাহরিয়ার মাহমুদ অপু।
এর আগে দুপুরে নীলক্ষেতে সড়ক অবরোধ শুরুর পর কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদেরকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এ সময় আন্দোলনকারীদের কেউ কেউ জানান, তারা বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। কেউ কেউ বলেন, তারা স্যানিটাইজার খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। দৈনিক শিক্ষাডটকমের লাইভেও বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনকারীদের বিভিন্ন রকম তথ্য দিতে দেখা যায়। পরে জানানো হয়, তারা কেউ বিষ পান করেননি। অতিরিক্ত গরমে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন।
এ সময় তারা আরো জানান, দাবি আদায় না হওয়া অবধি কেউ ঘরে ফিরে যাবেন না। বিকেলে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলেও তারা কেউ রাজপথ ত্যাগ করেননি। তবে সন্ধ্যার দিকে তারা অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করেন।
শাহরিয়ার মাহমুদ অপু বলেন, ইতোমধ্যে স্নাতক ৩য় বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আগামী মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) ঢাবির নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অধিভুক্ত সাত কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে শিক্ষা কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট একটি সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে বিষয়টি পুনরায় উত্থাপন করা হবে বলে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে।
আন্দোলনের আরেক মুখপাত্র তসলিম চৌধুরী বলেন, আমাদের যে সামনে পজিটিভ সিদ্ধান্ত আসবে সেটি জেনে বুঝে আমরা এখান থেকে উঠছি। ইতোমধ্যে আমরা লিখিত দুটি নোটিশে আশ্বস্ত হয়েছি। আমরা আশাবাদী, আমাদের পক্ষেই সামনে পজিটিভ নোটিশ আসবে। আমরা প্রায় সফলতার দ্বার প্রান্তে, বলা চলে আমরা সফল।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের এক সূত্রে জানা গেছে, ঢাবি কর্তৃপক্ষ মৌখিকভাবে সিজিপিএ শিথিল করে তিন বিষয় পর্যন্ত মানোন্নয়ন পরীক্ষার মাধ্যমে পরবর্তী বর্ষে প্রমোশনের যে দাবি সেটি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে এবং আগামী দেড় মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তা বাস্তবায়ন করবে বলে আন্দোলনরতদের জানানো হয়েছে। যেহেতু এটি একটি সময় সাপেক্ষ বিষয়। তাই ঢাবি কর্তৃপক্ষ সময় নিয়েছে। সেই সঙ্গে পরবর্তী বর্ষের প্রস্তুতি নিতে বলেছে সবাইকে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, প্রথম বর্ষ থেকে দ্বিতীয় বর্ষে প্রমোশন পেতে সিজিপিএ ২ প্রয়োজন, দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় বর্ষে প্রমোশন পেতে সিজিপিএ ২ দশমিক ২৫ এবং তৃতীয় থেকে চতুর্থ বর্ষে প্রমোশন পেতে ২ দশমিক ৫ প্রয়োজন। তা না হলে আবারও আগের বর্ষে থাকতে হয়। তাই তারা এই সিজিপিএর শর্ত শিথিল করে তিন বিষয় পর্যন্ত মানোন্নয়ন পরীক্ষার মাধ্যমে পরবর্তী বর্ষে প্রমোশন চান। এছাড়াও তাদের অভিযোগ বিজ্ঞান, কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভেদে প্রমোশন পেতে রয়েছে পৃথক পৃথক বৈষম্য।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।