ফরিদগঞ্জে সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ওই শিক্ষা কর্মকর্তার আর্থিক হয়রানি, বদলি, ভুয়া ডেপুটেশন আতঙ্কে ভুগছেন সাধারণ শিক্ষকরা। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে তিনি নিজ ফেসবুক আইডি থেকে নৌকা প্রতীকের পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন। ৬ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অশালীন পোস্ট দিয়ে ভোল পাল্টিয়েছেন। বর্তমানে বিএনপি’র এক নেতাকে ফুফাতো ভাই পরিচয় দিচ্ছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষকরা। এ বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফাতেমা মেহের ইয়াসমিন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯ সেপ্টেম্বর সমাপ্ত হওয়া দ্বিতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষায় মানসিক চাপ প্রয়োগ করে অধিকাংশ স্কুল থেকে ৫ শত টাকা হারে আদায় করেছেন মাহবুবুর রহমান। এ ছাড়া স্কুল ভিজিট করলে তাকে ৫ শত টাকা দিতে হয়। ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য ২ লাখ টাকা বরাদ্দের ব্যবস্থা করে দেবেন- এমন অসত্য আশ্বাসে কয়েক জনের কাছ থেকে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা, ৫০ হাজার টাকা স্লিপ বাজেট দেবেন বলে পাঁচ হাজার টাকা, বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণে শিক্ষকের নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য ৫ শত টাকা হারে আদায় করেছেন। মৌখিকভাবে ডেপুটেশনের কথা বলে আর্থিক হয়রানি করেন। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে সকল স্কুলের শিক্ষকদের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা তুলে নিয়েছেন মা’র অপারেশনের কথা বলে। পরে শিক্ষকরা জানতে পেরেছেন তার মা’র অপরাশেন হয়নি।
কয়েকজন শিক্ষক অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, হয়রানির ভয়ে টাকা দিয়েছি। তারা বলেছেন, আমরা হয়রানি থেকে নিস্তার চাই। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত করতে হলে তাকে সরিয়ে দিতে হয়। অন্যথায়, অধস্তনরা কথা বলতে সাহস পান না। এ কারণে অভিযোগ প্রমাণ করা কষ্টকর হয়।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির ফরিদগঞ্জ উপজেলা সভাপতি বিল্লাল হোসেন বলেন, মাহবুবুর রহমান স্যারের আর্থিক কেলেঙ্কারি নতুন নয়। সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন কবির বলেন, এমন অভিযোগ অনেক দিনের। আমরা সরকারি চাকরির শৃংখলা বজায় রাখার প্রয়োজনে কিছু বলতে পারি না।
প্রধান শিক্ষক হাসিনা আক্তার ডলি বলেন, স্যার আমাদের সততা শিক্ষা দেবেন। উল্টো হয়রানি করেন এবং ভীতি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক নেতাদের নাম ভাঙান। অভিযুক্ত মাহবুবুর রহমান বলেছেন, মা’র চিকিৎসার জন্য পাঁচ লাখ নয়, তিন লাখ সামথিং টাকা নিয়েছি। অন্যান্য টাকা নেয়ার দাবি সত্য নয়। কয়েকজন শিক্ষক আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। সারা বাংলাদেশে আর কোনো সহকারী শিক্ষা অফিসার আমার মতো পরিশ্রম করে না। নৌকা প্রতীকে প্রচারণা, ব্যানারে নিজের ছবি ছাপানো, ফেসবুকে অশালীন পোস্টের বিষয় সত্য নয় বলে দাবি করেন। ওই সময়, তার আইডি’র স্ক্রিনশট দেখালে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি।