দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: প্রাইমারির গণ্ডিও পেরোয়নি কিন্তু ভুয়া সনদ নিয়ে নামের শুরুতে লাগিয়েছেন ডক্টরেট ডিগ্রি। নিজের মতো আরও কয়েকজনকে জুটিয়ে গড়ে তুলেছেন ভুঁইফোঁড় মানবাধিকার সংগঠন‘ আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশন’। গণমাধ্যমে কারও বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর ওই ব্যক্তির কাছে হাজির হয়ে সংগঠনের উপদেষ্টা পরিচয়ে দাবি করেন চাঁদা। চাহিদামতো চাঁদা না পেলে ডাকে সংবাদ সম্মেলন। সংগঠনের ব্যানারে মিথ্যা সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন করে চাপে ফেলে হাতিয়ে নেয় লাখ লাখ টাকা। এদের কবলে পড়েছেন সংসদ সদস্যসহ অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি।
ভুয়া এই সংগঠনের উপদেষ্টা পরিচয় দেওয়া সুফি সাগর সামসকে গত শনিবার গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম উত্তর বিভাগ।
ডিএমপির ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, তার নামের সঙ্গে ডক্টরেট ডিগ্রির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের দ্য রিজেন্ট অব ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ইউনিভার্সিটির একটি সনদ দেখান। যদিও ওই নামে যুক্তরাষ্ট্রে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েরই খোঁজ পাওয়া যায়নি। এক পর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন তার যুক্তরাষ্ট্রের প্রবাসী এক ভাই এই সনদ সংগ্রহ করে দিয়েছেন।
ডিবিপ্রধান হারুন বলেন, ময়মনসিংহ-১১ (ভালুকা) আসনের এমপি মো. আব্দুল ওয়াহেদের নামে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে মিথ্যা অভিযোগে চিঠি দেয় এই সামস। তারপর এমপির কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেওয়ায় সামস ও তার সহযোগীরা এই এমপির বিরুদ্ধে মিথ্যা শিরোনামে উচ্চ আদালতে মীমাংসিত বিষয়ে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সংবাদ সম্মেলন করে তা বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এটি নজরে এলে এমপির ব্যক্তিগত সহকারী বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলার তদন্তে নেমে সামসকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সামস নিজেকে বাংলাদেশ হিউম্যানিস্ট পার্টি বিএইচপির মহাসচিব হিসেবেও দাবি করেন। প্রকৃতপক্ষে নির্বাচন কমিশনে এ নামের কোনো দলের নিবন্ধন নেই। এর আগে মানব পাচারের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাম্বাসির করা একটি মামলায় আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও মহাসচিবকে গ্রেপ্তার করা হয়। এবার গ্রেপ্তার হলো এই সংগঠনের উপদেষ্টা সুফি সাগর সামস।