নিয়োগ পরীক্ষায় নির্ধারিত সময়ের চেয়ে এক-চতুর্থাংশ অতিরিক্ত সময় পাবেন প্রতিবন্ধীরা। সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রয়োজনীয় শ্রুতিলেখকদের যোগ্যতাও নির্ধারণ করা হয়েছে। এ জন্য শ্রুতিলেখক নিয়োগ নীতিমালা-২০২৩ জারি করেছে সরকার।
গতকাল বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
জনপ্রশাসন ও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আগে এসংক্রান্ত নিয়ম থাকলেও নির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা ছিল না। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবার প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন-২০১৩ অনুযায়ী নির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি করেছে। নীতিমালায় শ্রুতিলেখকের যোগ্যতা, দায়িত্ব, নিয়োগের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, মনোনয়ন পদ্ধতি, সম্মানীসহ সকল বিষয়ে স্পষ্ট করেছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত ও আধাস্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী আকস্মিক দুর্ঘটনাজনিত কারণে কিংবা স্থায়ী প্রতিবন্ধিতার কারণে স্বহস্তে লিখিতে সক্ষম নহেন এমন পরীক্ষার্থীদের লিখিত পরীক্ষায় সহযোগী হিসাবে শ্রুতিলেখক নিয়োগ সংক্রান্ত নীতিমালা করা হয়েছে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, শ্রুতিলেখকের সাহায্য নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত সময়ের চেয়ে এক-চতুর্থাংশ সময় বেশি পাবেন। অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টা সময়ের বিপরীতে ১৫ মিনিট সময় অতিরিক্ত পাবেন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা। এক ঘণ্টার কম সময়ের পরীক্ষার জন্য অতিরিক্ত সময় হবে আনুপাতিক হারে। তবে অতিরিক্ত সময় ন্যূনতম পাঁচ মিনিটের কম হবে না।
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ব্যতীত আকস্মিক দুর্ঘটনাজনিত কারণে কিংবা স্থায়ী প্রতিবন্ধিতার কারণে কোনো পরীক্ষার্থীর শ্রুতিলেখকের প্রয়োজন হলে পরীক্ষার্থীরা প্রতি ঘণ্টা সময়ের বিপরীতে ১০ মিনিট সময় অতিরিক্ত পাবেন। এক ঘণ্টার কম সময়ের পরীক্ষার জন্য অতিরিক্ত সময় হবে আনুপাতিক হারে। তবে অতিরিক্ত সময়ের ন্যূনতম পাঁচ মিনিটের কম হবে না।
যেসব পরীক্ষায় সাধারণভাবে ইলেকট্রনিক ডিভাইস, ক্যালকুলেটর, জ্যামিতি বক্স বা অনুরূপ সরঞ্জাম ব্যবহারের অনুমতি থাকে, সেসব পরীক্ষায় শ্রুতিলেখক পরীক্ষার্থীর নির্দেশ অনুযায়ী উক্ত সরঞ্জাম ব্যবহার করতে পারবেন। প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী তাঁর উপযোগী সরঞ্জাম যেমন টকিং ক্যালকুলেটর, ব্রেইল স্লেট, টেইলর ফ্রেম, জিওমেট্রি ম্যাট, হুইলচেয়ার ও ব্রেইল স্কেল অ্যাবাকাস ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারবেন।
নিয়োগ কমিটি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী, আকস্মিক দুর্ঘটনাজনিত কারণে কিংবা স্থায়ী প্রতিবন্ধিতার কারণে স্বহস্তে লিখিতে সক্ষম নহে এমন প্রতি পরীক্ষার্থীর জন্য দুজন শ্রুতিলেখকের ব্যবস্থা করবে। যাতে কেউ অসুস্থ হলে অপরজন তার দায়িত্ব পালন করতে পারেন।