নাটোরের গুরুদাসপুরে একটি কলেজের অধ্যক্ষের নামে রেখে যাওয়া আমের বস্তায় থাকা বোমা নিষ্ক্রিয় করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজমের বোম ডিসপোজাল ইউনিট।
শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বোমাটি নিষ্ক্রিয় করা হয় বলে জানিয়েছেন গুরুদাসপুর থানার ওসি মোহা. মোনোয়ারুজ্জামান।
বোমাটি গুরুদাসপুর উপজেলার বঙ্গবন্ধু টেকনিক্যাল বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ সাইদুল ইসলামের নামে আসা বস্তায় রাখা ছিল।
শনিবার সকালে অধ্যক্ষ কার্যালয়ের সামনে প্লাস্টিকের বস্তাটি কলেজ কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। বস্তাটিতে ‘আম্রপালি আম ৩০ কেজি’ উল্লেখ করে অধ্যক্ষের ঠিকানা ও ফোন নম্বর লেখা ছিল।
কিন্তু প্রেরকের নাম-ঠিকানা না থাকায় ওই বস্তায় আম না বোমা; তা নিয়ে আতঙ্ক ও সন্দেহের সৃষ্টি হয়। পরে কলেজ থেকে পুলিশ ও র্যাবকে জানানো হয়।
ওসি মোনোয়ারুজ্জামান বলেন, “বিষয়টা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলাম যে বস্তার ভিতরে কি আছে। এজন্য আমরা বোম ডিসপোজাল ইউনিটকে ডেকেছিলাম, উনারা এসে সহায়তা করেছেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম বোম ডিসপোজাল ইউনিটের পরিদর্শক মো. শফিউদ্দিন বলেন, “দূর নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের সাহায্যে আমরা বোমাটি নিষ্ক্রিয় করেছি।
“এটা অনেক বড় ধরনের একটা বোমা ছিল। ককটেল জাতীয় তিনটা কন্টেনার ছিল, পেট্রোল বোমার তিনটা বোতল ছিল, প্লাস্টিকের বয়ামে কেমিক্যাল জাতীয় জিনিস ছিল তিনটা।“
অধ্যক্ষ সাইদুল ইসলাম সাইদ বলেন, “স্থানীয় একটি চক্র তিন-চার দিন আগে থেকে কলেজ উড়ায় দিবে বলে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। তাই তারা বিস্ফোরক রেখে গেছে মনে হয়।”
কারা হুমকি-ধামকি দিচ্ছে, এমন প্রশ্নে ‘সারাদিনের ধকলে’ অসুস্থ্ হয়ে পড়েছেন জানিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকের কাছ থেকে জেনে নিতে বলে তিনি কল কেটে দেন।
ওসি মোনায়ারুজ্জামান বলেন, “প্রাথমিকভাবে যেটা পেয়েছে এখানে বোম সদৃশ বস্তু ছিল। ধ্বংস করার পরে যে আলামতগুলো আছে সেগুলো ল্যাব টেস্ট করার পরে জানা যাবে কি ধরণের এক্সপ্লোসিভ এখানে ছিল।“
“এর সঙ্গে কারা যুক্ত, আমরা তথ্য-প্রযুক্তিসহ অন্যান্য সকল ধরনের সামর্থ্য ইউজ করে যদি কাউকে সনাক্ত করতে পারি এরপর আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
“এ ঘটনায় এখনো কেউ কোনো অভিযোগ করেনি, কোনো মামলাও এখনো দায়ের করা হয়নি। আমরা ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।“
সিংড়া-গুরুদাসপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, “বিষয়টাকে আমরা নিঃসন্দেহে সিরিয়াসলি নিয়েছি। সকাল থেকেই আমাদের টিম এখানে মোতায়েন ছিল। পারিপার্শ্বিক এলাকাগুলোতে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েন ছিল।
“এখানে যদি কারো কোনো ব্যাড ইনটেনশান থেকে থাকে সেই জায়গা থেকে আমরা কাজ করবো। আমরা তদন্ত করে তারপরে বলতে পারবো বিষয়টা কোনদিকে যাচ্ছে।“