পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় জট ক্রমশঃ পাকিয়েই যাচ্ছে। অভিযুক্ত গোপাল দলপতির সন্ধান মিলেছে। গোপাল নিজেই সিবিআইকে ফোন করে জানিয়েছেন যে, তিনি ১ মার্চ সিবিআই দপ্তরে হাজির হবেন। নিয়োগ মামলায় অভিযুক্ত এবং আটক হুগলির যুব তৃণমূল নেতা জেরায় গোপাল দলপতি ও তার স্ত্রী হৈমন্তীর নাম বলেছেন। তিনি জানান, দুর্নীতির অনেক টাকার হদিস হৈমন্তী জানেন। আর তার বদলা নিতেই যেন গোপাল বললেন, কুন্তল বিলাসবহুল গাড়ি-ফ্ল্যাট উপহার দিয়েছিলো তৃণমূল যুব সভানেত্রী অভিনেত্রী সায়নী ঘোষকে। প্রচ্ছন্নভাবে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে সায়নী ঘোষের নাম জুড়ে দিয়েছেন গোপাল। সিবিআই এখন সায়নী ঘোষকে জেরা করতে চাইছে।
আসানসোল বিধানসভা কেন্দ্রে জোর লড়াইয়ের পর বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পলের কাছে হার মানেন সায়নী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শূন্যপদ যুব তৃণমূল সভাপতির পদটি দেন। সেই সায়নী এখন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে।
এদিকে দিন যত গড়াচ্ছে, হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে রহস্য ততো বাড়ছে।
গোপাল দলপতি সিবিআইয়ের সামনে এলেও রোববার সকাল পর্যন্ত হৈমন্তী অধরা। গোপালের সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়েছে সেই ব্যাপারে সিবিআই প্রায় নিশ্চিত। প্রথম স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে গোপাল বিয়ে করেন অভিনেত্রী, মডেল হৈমন্তীকে। হৈমন্তীর পরিবার এই বিয়ে মেনে নেয়নি। তারপর গোপাল নাম পাল্টে আরমান গঙ্গোপাধ্যায় হন হৈমন্তীর ইচ্ছাতেই। একটি চিট ফান্ড কোম্পানিতে দু’জন কাজ করার সময় আলাপ হয়। তারপর বিয়ে। হৈমন্তী বরাবরই উচ্চাকাক্সক্ষী। গোপালকে সিঁড়ি করে নাকি সে এগিয়ে চলে।
গোপালের একসময় কোচিং সেন্টার ছিল। সেখান থেকেই শিক্ষা কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ। তোলাবাজি, দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা হৈমন্তীর অ্যাকাউন্টে আছে বলে সিবিআই কর্তাদের ধারণা। শনিবার সিবিআই হৈমন্তীর বেহালার ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে রোল নম্বর সমেত কিছু টেট পরীক্ষার্থীর হদিস পেয়েছে। রামমোহন সরণির এই ফ্ল্যাটে গোপালরা না থাকলেও গোপাল-হৈমন্তী টালিগঞ্জের একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করতো। সেই ফ্ল্যাটও এখন ফাঁকা। হৈমন্তীর নামে লুকআউট নোটিস জারি করেছে সিবিআই। তাদের ধারণা, দু-একদিনের মধ্যে হৈমন্তী ধরা দেবে।