নেচে গেয়ে দেবী দূর্গাকে বিদায় জানালেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। বিজয়া দশমীর মাধ্যমে দুর্গা দেবী বাবার বাড়ি থেকে কৈলাসে তার শ্বশুরবাড়িতে চলে যান। আর এর মাধ্যমে শেষ হয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় পূজা। দেবী দূর্গা কৈলাসে শ্বশুর বাড়ি চলে গেলেও ভক্ত কূলের প্রত্যাশা আগামীতে মা আবারো মর্ত্যে ফিরবেন, সেই আশাতে উন্মুখ হয়ে থাকেন তারা।
মঙ্গলবার ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে দুর্গা দেবীকে বিদায় জানাতে মন্দিরে মন্দিরে চলে বিসর্জনের আয়োজন। মন্ত্রপাঠ, ঢাকঢোল, শঙ্খ, উলু ধ্বনির মধ্যদিয়ে মহাদশমীতে বিহিত পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন সম্পন্ন হয়। এদিকে রাজধানীতে প্রতিমা বিসর্জনের আগে এক বিজয়া শোভাযাত্রা বের করে মহানগর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটি।
শোভাযাত্রাটি পলাশীর মোড় থেকে প্রতিবছরের মতো শ্রীশ্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির হয়ে পলাশী বাজার, জগন্নাথ হল, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর, হাইকোর্ট, বঙ্গবাজার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ভবন, গোলাপ শাহ্ মাজার, গুলিস্থান মোড়, নবাবপুর রোড, রায় সাহেব বাজার, বাহাদুর শাহ পার্ক হয়ে বুড়িগঙ্গা নদীর ওয়াইজ ঘাটে বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ ঘুরে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হয়। এতে অংশ নেন সহস্রাধিক ভক্ত। বিসর্জনের আগে নেচে-গেয়ে দেবী দূর্গাকে বিদায় জানান তারা।
বকশি বাজারের বাসিন্দা উৎসব রায় দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মা চলে যাচ্ছেন অবশ্যই খারাপ লাগছে। আসছে বছর মা আবার আসবেন, এটাই প্রত্যাশা। তরপরেও পূজা অনেক ভালো কেটেছে।
নীপা সাহা নামে আরেক ভক্ত বলেন, এবারের পূজা ভীষণ ভালো কেটেছে। তবুও শেষ বেলায় মা দুর্গাকে বিদায় দিতে একটু তো খারাপ লাগছেই। কয়েকটি দিন ছিলো ভালোই ছিল, আত্মীয়-স্বজন পাড়া প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভালোই কেটেছে। এখন আগামী বছরের জন্য অপেক্ষা। বিসর্জনের পরই হয়তো আগামী বছরের জন্য মায়ের জন্য ক্ষণ গোণা শুরু হবে।
শাস্ত্রমতে, শ্বশুরবাড়ি কৈলাস থেকে কন্যারূপে দেবী দুর্গা বাপের বাড়ি মর্ত্যলোকে বেড়াতে এসেছিলেন। আর পাঁচ দিনের পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে তিনি আবার স্বামীর বাড়ি ফিরে যান। জগতের মঙ্গল কামনায় এ বছর দেবী দুর্গা কৈলাশ থেকে মর্ত্যালোকে আসেন। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন ঘাটে রাত ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ২৪৬টি মণ্ডপের প্রতিমা একে একে বিসর্জন দেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, এ বছর সারা দেশে ৩২ হাজার ৪০৮ মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর ঢাকা মহানগরীতে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হয় ২৪৫টি মন্দিরে। গত বছর এ সংখ্যা ছিলো ২৪২টি।