পদ্মা সেতুতে টোল দেওয়ার জন্য এখন আর লাইনে দাঁড়াতে হবে না। এ মাসেই চালু হচ্ছে কার্ড সিস্টেম। যাতে আগে থেকেই টাকা রিচার্জ করে রাখা যাবে। টোল প্লাজার কাছে পৌঁছালে রোবোটিক ক্যামেরা সেই গাড়িকে শনাক্ত করবে এবং কার্ড থেকে টোল কেটে নেবে। কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন এই কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে। সব ধরনের টোল আদায়ে এ প্রযুক্তি ব্যবহারের পরামর্শ তাদের।
আরও সহজ হচ্ছে পদ্মা সেতুর টোল দেওয়ার প্রক্রিয়া। নগদ টাকা দেওয়ার পাশাপাশি চালু হচ্ছে ইলেক্ট্রনিক টোল কালেকশন সিস্টেম (ইটিসিএস) এবং হাইব্রিড টাচ অ্যান্ড গো সিস্টেম। আর নতুন এই পদ্ধতির জন্যই সেতুর দুই পাড়ে থাকছে আলাদা বুথ।
স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালু হলে একটি গাড়ি সর্বোচ্চ তিন সেকেন্ডে টোল দিতে পারবে। টোল আদায়ের দায়িত্বে থাকা কোরিয়ান কোম্পানি কেইসি জানিয়েছে, এ মাসেই চালু হবে নতুন প্রযুক্তি।
কেইসি প্রকল্প পরিচালক জিনউ পার্ক জানিয়েছেন, এ সেবা নিতে হলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) আরএফআইডি ট্যাগ থাকতে হবে। যার মাধ্যমে ডিজিটাল পেমেন্ট দেওয়া যাবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এক্সপ্রেসওয়ে ও সেতুর টোলের জন্য এক কার্ড এক পেমেন্ট সিস্টেম চালু রয়েছে। এখন বাংলাদেশে সময় এসেছে এ পদ্ধতি চালুর। এতে একাধিক টোল কার্ড ব্যবহারের ভোগান্তি থেকে বাঁচবে গ্রাহকরা।
পদ্মা সেতুর টোল আদায়ের জন্য আধুনিক ব্যবস্থার সবশেষ প্রস্তুতি দেখতে মাওয়ায় যান দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক। এ সময় বাংলাদেশের উন্নয়নে পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি। তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশিদার হতে চায় দক্ষিণ কোরিয়া। এ দেশের অগ্রযাত্রায় আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। আগে শুধু পোশাক শিল্পে অবদান রেখেছে দক্ষিণ কোরিয়া, এখন অবকাঠামো খাতেও বিনিয়োগে আগ্রহী আমরা।
টোলের কার্ড এবং রেজিস্ট্রেশনের জন্য পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে কাউন্টার থাকছে। এই কার্ড টোল মেশিনে ছোঁয়ালেই টাকা কেটে নেবে। এ ছাড়া গাড়িটি পদ্মা সেতু পার হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই টোল আদায় করে নেবে। সাথে সাথেই দেখা যাবে কার্ডের ব্যালেন্স।
২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ নভেম্বর পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানি। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেতু চালু হওয়ায় দেশের ২১ জেলার যাতায়াত সহজ হওয়ার পাশাপাশি গড়ে উঠছে নতুন শিল্প-কারখানা। ফলে প্রসার ঘটছে ব্যবসা-বাণিজ্যের, সৃষ্টি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।