শেষ হয়েছে পদ্মা সেতুর পাথর বিহীন রেল লাইন নির্মাণ কাজ। বুধবার (২৯ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে প্রকল্পের দশমিক ১৫ কিলোমিটার কাজ সম্পন্ন হয়। এতে রেল সড়কে মাওয়ার সঙ্গে জাজিরা প্রান্তের সংযোগ হলো।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, ৪ এপ্রিল পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চলাচলে কথা রয়েছে। প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা-যশোর রেলপথ নির্মাণ শেষে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ যেমন সহজ হবে তেমনি পাল্টে যাবে অর্থনৈতিক দৃশ্যপট। বুধবার পদ্মা সেতুর বাকি সাত মিটার অংশে ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে।
চায়না থেকে মঙ্গলবার আকাশ পথে বাংলাদেশে আসে শেষ স্লিপারটি। রাতে শুরু হয় স্লিপারটির বসানোর কাজ। নিখুঁতভাবে মাপজোক শেষেই স্থাপন করা হয় সেতুর ওপর। তাপমাত্রা কমে আসলে শুরু হয় স্লিপারটির ওপর ঢালাই।
ঢাকা-মাওয়া রেললাইনের ট্র্যাক ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ শওকত আলী বলেন, বিভিন্ন রকম ডাইমেনশনের মেজারমেন্ট করার দরকার ছিল। আমরা সেটি করছি। এ মেজারমেন্টগুলো জিপিএসের মাধ্যমে নেওয়া হয়।
প্রকৌশলীরা জানান, ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার মূল সেতু ও দুইপাশের ভায়াডাক্ট সেতু মিলিয়ে পদ্মা রেল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার। মূল সেতুতে ১১ হাজার ১৪০টি স্লিপার স্থাপিত হয়েছে। মুভমেন্ট জয়েন্টের ইস্পাতের ৮টি স্লিপার ছাড়া বাকি সবগুলো কংক্রিটের তৈরি। সিএসসি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালটেন্টের (সিএসসি) তত্ত্বাবধানে চলছে পদ্মা সেতুর এ রেলসংযোগ প্রকল্পের কাজ। পদ্মা সেতু ছাড়াও প্রকল্পের মোট ১৭২কিলোমিটার লেভেল ক্রসিংবিহীন রেলপথে ৩২টি রেল কালভার্ট, ৩৭টি আন্ডারপাস এবং ১৩টি রেলসেতুর কাজ শেষ হয়েছে।
পদ্মা মূল সেতু ও ভায়াডাক্টের সিনিয়র প্রকৌশলী জহুরুল হক বলেন, ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার পাথর বিহীন রেললাইন আর বাকিটা ব্ল্যাস্টেট রেললাইন। এরমধ্যে পদ্মা সেতুর ওপরের বাকি থাকা সাত মিটার অংশের ঢালাই শেষ হয়। পাথর বিহীন এ রেলপথ তৈরিতে খরচ বেশি হলেও এটি হবে টেকসই। এ রেল পথে কোনো ঝাঁকুনি হবে না।
পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পের মাওয়া-ভাঙ্গা সেকশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আহমেদ বলেন, স্লিপারটি সফলভাবে সেতুর ওপর স্থাপন করা হয়েছে। বুধবার বাকি সাত মিটার ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন হয়। আশা করছি আগামী ৪ এপ্রিল পরীক্ষামূলক ভাবে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে রেল চালাতে পারবো।