পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম হয়েও বাদ পড়েছিলেন বুয়েটের মারুফ - দৈনিকশিক্ষা

পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম হয়েও বাদ পড়েছিলেন বুয়েটের মারুফ

দৈনিক শিক্ষাডটকম, ডেস্ক |

৩৮তম বিসিএসের পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম হয়েও পিএসসির সুপারিশ থেকে বাদ পড়েছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক ছাত্র বিল মারুফ বিন বারিক।  সাড়ে তিন বছর অপেক্ষার পর অবশেষে তার নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) থেকে নিয়োগের সুপারিশ পেয়েও নেতিবাচক প্রতিবেদনের বাদ পড়া বারিকসহ এমন ২৫৯ জনকে গত বুধবার (১৪ আগস্ট) নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, মেধার সব ধাপ পেরিয়ে হয়েছিলেন বিসিএস ক্যাডারের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত। কিন্তু অজানা কারণে নিয়োগ আটকে গিয়েছিল।  ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে ৩৮তম বিসিএসে ২ হাজার ২০৪ জনকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। ওই বছর বিল মারুফ বিন বারিক পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম হয়েছিলেন তিনি। 

  

যেহেতু পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম হয়েছিলেন, তাই গেজেট থেকে নাম বাদ পড়তে পারে এটাও কখনো ভাবেননি। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে যখন গেজেট প্রকাশ করা হয়, তখন গেজেটে নাম না দেখে বিশ্বাসই হচ্ছিল না মারুফের।

ওই সময়ের স্মৃতিচারণ করে মারুফ বলেন, কেন বাদ পড়লাম, সেটা জানার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, পুলিশ বিভাগ ও প্রশাসন—সব জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করেছি। কিন্তু বাদ পড়ার সঠিক কারণ জানতে পারিনি। তবে ধারণা করি, আমার বাবা একজন রাজনীতি–সচেতন মানুষ। তিনি নওগাঁ বিসিক শিল্পনগরীর মালিক সমিতির সভাপতি হিসেবে আছেন। উনি নির্ভীক ও সত্যবাদী একজন মানুষ হিসেবে সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করতেন। এ বিষয়টাকে তৎকালীন প্রশাসন হয়তো সরকার বিরোধিতা হিসেবে পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রতিবেদনে তুলে ধরেছিল। ঢাকায় এসে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করি, কিন্তু কোথাও কোনো উত্তর পাইনি। 

এরপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলেন মারুফ। আবেদনেও কাজ হয়নি। পরবর্তী সময়ে এমন প্রার্থী যারা গেজেটভুক্ত হননি, তারা মিলে হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট একটি রুল জারি করেছিলেন, কিন্তু চূড়ান্ত কোনো সমাধান আসেনি। কয়েক বছর ঘুরেও কোনো সমাধান না পেয়ে পররাষ্ট্র ক্যাডারে যোগদানের আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন মারুফ।

২৮তম বিসিএস থেকে ৪২তম বিসিএস পর্যন্ত এমন বাদ পড়া সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীর সংখ্যা ছিল চার শতাধিক। ১৪ আগষ্ট তাদের মধ্য থেকে যে ২৫৯ জনের নামে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়, তাদেরকে জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫ অনুসারে ২২০০০-৫৩০৬০ টাকা বেতনে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন জারির পর ফেসবুকের এক স্ট্যাটাসে বারিক লেখেন, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহর অশেষ রহমতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব হিসেবে গেজেটেড হলাম। সবার কাছে দোয়াপ্রার্থী যেন দেশের জন্য, মানুষের জন্য নিজেকে পরিপূর্ণভাবে নিয়োজিত করতে পারি।

 

বিল মারুফ বিন বারিক জেনারেল শিক্ষার পাশাপাশি পবিত্র কুরআনের হাফেজও।  

এ বিষয়ে তার মা গণমাধ্যমকে বলেন, আমার ছেলে বিল মারুফ, শিশুকাল থেকেই তার মেধা অতি ক্ষুরধার। তাকে একইসঙ্গে হাফেজি মাদ্রাসা ও স্কুলে পড়িয়েছি। এতে করে সে কুরআনের হাফেজ, পাশাপাশি বৃত্তিসহ এসএসসি, এইচএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস এবং বুয়েটে ৪২ তম মেধাক্রমে চান্স পেয়েছিলো।  বুয়েট থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করার পর পিডিবি পাওয়ার প্ল্যান্টে ইঞ্জিনিয়ার পদে চাকরি হয়। এটা শুনে আমি বলেছিলাম ঠিক আছে তুই তাহলে পিডিবিতে জয়েন কর। তার পাশাপাশি বিসিএসের জন্য প্রস্তুতি নে। চাকরির পাশাপাশি অনেক কষ্ট করে পড়ত আমার ছেলে। আমি ফোন দিয়ে খোঁজ নিতাম বাবা ঠিকমত খাওয়া দাওয়া করছিস তো, কুরআন পড়েছিস, বিসিএসের পড়া হচ্ছে এসব আর কি। 

তিনি বলেন, ‘ও বলত মা বিসিএস আমার হবে না, অনেক পড়া আমি পারব না। আমি বলতাম পারবি বাবা একটু চেষ্টা কর ইনশাআল্লাহ্, তুই প্রথমবারেই চান্স পাবি। যেভাবে একইসঙ্গে মেডিকেলে, বুয়েটে, ঢাবিতে চান্স পেয়েছিলি ঠিক সেভাবে বিসিএসেও তোর হয়ে যাবে।

আল্লাহর রহমতে আমার ছেলে তার প্রথম বিসিএসে প্রিলিতে রিটেনে ও ভাইবাতে পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম স্থান অধিকার করে । ওর বিসিএসের রেজাল্ট পেয়ে আমাকে ফোন করল, মা আমি পররাষ্ট্র কাডারে প্রথম হয়েছি। আমি আলহামদুলিল্লাহ বলে কেঁদে ফেলেছি। ফোনের ওপারে ছেলে কাঁদে এপারে আমি, দুই মা ছেলে প্রায় ৫ মিনিট কেঁদেছি। তারপর আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া নফল নামাজ আদায় করে আত্মীয় স্বজনদের এই খুশির খবর জানিয়েছিলাম।

এরই মধ্যে প্রায় ৩/৪ মাস কেটে গেল। সেই বিসিএসের গেজেট প্রকাশ হল । পররাষ্ট্র ক্যাডারে ২৫ জন ছিল। ১ম বিল মারুফ বিন বারিক বাদ দিয়ে বাঁকি ২৪ জনকে গেজেট  দেওয়া হল।  শুরু হল বিল আনন্দ অশ্রু থেকে বেদনাশ্রু। হাসিনা সরকারের মন্ত্রানালয়ে অনেক ধরনা ধরে কোন কাজ হয়নি। কোর্টে রিট করেও কোন ফল হয়নি। ১৪ আগস্ট ২০২৪ আমার ছেলে সেই গেজেট ফিরে পেয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। ’

অটোপাসের সিদ্ধান্ত ব্যাড কালচার তৈরি করলো - dainik shiksha অটোপাসের সিদ্ধান্ত ব্যাড কালচার তৈরি করলো নবম শ্রেণি থেকে আবারো আলাদা বিভাগ থাকবে: শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha নবম শ্রেণি থেকে আবারো আলাদা বিভাগ থাকবে: শিক্ষা উপদেষ্টা পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তি : চূড়ান্ত সুপারিশের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ - dainik shiksha পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তি : চূড়ান্ত সুপারিশের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিএনপির ১৯৮ জন প্রাণ দিয়েছেন: ফখরুল - dainik shiksha ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিএনপির ১৯৮ জন প্রাণ দিয়েছেন: ফখরুল আসিফ নজরুলের গাড়ি আটকে ম্যাটস শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ - dainik shiksha আসিফ নজরুলের গাড়ি আটকে ম্যাটস শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ এইচএসসি বাতিলের ঘোষণা বলবৎ থাকবে: শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha এইচএসসি বাতিলের ঘোষণা বলবৎ থাকবে: শিক্ষা উপদেষ্টা সেসিপ কর্মকর্তাদের উচ্ছৃঙ্খলতায় শিক্ষাভবনে ভীতিকর পরিবেশ - dainik shiksha সেসিপ কর্মকর্তাদের উচ্ছৃঙ্খলতায় শিক্ষাভবনে ভীতিকর পরিবেশ ছাত্রীর সঙ্গে অধ্যক্ষের ‘আপত্তিকর ভিডিয়ো’ ভাইরাল - dainik shiksha ছাত্রীর সঙ্গে অধ্যক্ষের ‘আপত্তিকর ভিডিয়ো’ ভাইরাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036859512329102