পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়েরকৃত মামলায় অনামিকা খানম (২৪) নামে বিবিএ পড়ূয়া এক ছাত্রীকে গ্রেফতার করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল বুধবার সিআইডি সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়, ওই শিক্ষার্থী অশ্লীল ভিডিও ধারণ এবং ব্ল্যাকমেইলের ফাঁদে ফেলে নানাজনের কাছ থেকে অর্থ আদায় করতেন। অনামিকা একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ’র ছাত্রী। নবম শ্রেণিতে পড়ার সময়ই তিনি নেশায় জড়িয়ে পড়েন। এরপর ড্যান্স ক্লাবের সদস্যও হন তিনি।
অনামিকা ভুয়া পরিচয়ে ফেসবুক আইডি খুলে উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান, প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তাসহ রাজনীতিবিদদের টার্গেট করে বন্ধুত্ব করতেন। প্রেমের ফাঁদে ফেলে তার শিকারে পরিণত করতে খুব বেশি সময় নিতেন না তিনি। ভিডিও কলে নিয়মিত কথা বলতেন তাদের সঙ্গে।
কৌশলে একান্ত মুহূর্তের ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও ধারণ করতেন অনামিকা। ওই সব ছবি ও ভিডিও করার পর চাঁদা দাবি করতেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা দিতে না পারলে এসব ছবি-ভিডিও আত্মীয়স্বজনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকি দিতেন তিনি। কয়েক বছর ধরে এসব করে যাচ্ছেন তিনি।
সিআইডি জানায়, এক ভুক্তভোগীর করা রাজধানীর পল্টন থানায় করা মামলার ভিত্তিতে তাকে গত মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে সিআইডি সাইবার ইন্টেলিজেন্সের বিশেষ টিম। উদ্ধার করা হয় প্রতারণা এবং ব্ল্যাকমেইলিংয়ের কাজে ব্যবহৃত তিনটি মোবাইল ফোনসেট। তার মোবাইল ফোনে অসংখ্য লোকজনকে ব্ল্যাকমেইল করার তথ্য পাওয়া যায়।
বিকাশ-নগদের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার আলামতও পাওয়া গেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিভিন্ন প্রতারণাসহ সব অপকর্মের কথা অকপটে স্বীকার করেছেন তিনি। মূলত নেশার টাকা জোগাড় করতেই এই অনৈতিক পথ বেছে নেন তিনি।
অনামিকার বিরুদ্ধে পল্টন থানায় মঙ্গলবার এক ভুক্তভোগী পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের ৮(২)/৮(৩)/৮(৫)(ক) ধারায় মামলা দায়ের করেন। এর পরই তাকে গ্রেফতারে মাঠে নামে সিআইডি। গ্রেফতারের পর তাকে আদালতে তোলা হয়। এরপর আদালত থেকে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।