দৈনিকশিক্ষাডটকম ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার সদর শহর সিউড়ির বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার ধারে বিদ্যুতের খুঁটিতে, গাছের গোড়ায় কিংবা গাছের ডালে লাগানো হয়েছে প্লাস্টিকের পাত্র। পাত্রে নিয়মিত ঢালা হচ্ছে পরিষ্কার পানি। নিয়মিত সেই পানি বদলেও দেওয়া হচ্ছে। পরিষ্কার করা হচ্ছে পাত্রগুলিকেও। মুখের অংশটি বড় করে কাটা সেই পাত্রগুলি থেকে সহজেই পানি খেতে পারবে পশু-পাখিরা। প্রচণ্ড গরমে পশু-পাখিদের পানির তৃষ্ণা মেটাতে এ ভাবেই উদ্যোগী হয়েছে সিউড়ির এক দল কলেজ পড়ুয়া। তাঁদের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে সিউড়ি পুরসভাও। আগামীতে দিনে গোটা শহর জুড়েই এই পদ্ধতি চালু করার চেষ্টা চলছে বলে দাবি পড়ুয়াদের।
তীব্র গরমে সিউড়ি শহর ও শহর সংলগ্ন এলাকায় শুকিয়ে গিয়েছে পুকুর। দেখা নেই বৃষ্টিরও। সরকারি কলগুলিতেও দিনভর পানি মিলছে না৷ ফলে, জলকষ্ট দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। পানির জন্য যখন মানুষকেই অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে, তখন পশু-পাখিদের অবস্থা সহজেই অনুমেয়। এক চুমুক পানির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে পথের পশুরা। সেই অসুবিধা কিছুটা লাঘব করতেই এগিয়ে এসেছেন এক দল কলেজ পড়ুয়া।
সুরজিৎ দত্ত, সুরজিৎ ভাণ্ডারি, আকাশ দাস, হিরণ দাস প্রমুখেরা মিলে পশু-পাখিদের জন্য পানির ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা নেন। সে মতো, সিউড়ির বড় কালিবাড়ি থেকে দত্তপুকুর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় রাস্তার ধারের গাছের গোড়ায় এবং আলো ও বিদ্যুতের খুঁটিগুলিতে প্লাস্টিকের পাত্র লাগান তাঁরা। পাখিদের জন্য গাছের উপরের দিকেও বেশ কিছু পাত্র লাগিয়েছেন এই পড়ুয়ারা৷ প্রাথমিকভাবে পাত্রগুলিতে পানি রাখার পরে প্রতিটি পাত্রের উপর একটি করে পোস্টার দিয়ে স্থানীয় মানুষদের কাছে পাত্রে নিয়মিত পানি দেওয়ারও আবেদন করেন তাঁরা৷
এই কাজের অন্যতম উদ্যোক্তা সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সুরজিৎ বলেন, পাত্রগুলিতে পানি থাকছে কি না, তা আমরা নিয়মিত নজর রাখছি। কোথাও কোথাও স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেরাই পাত্রগুলিতে পানি ঢেলে দিচ্ছেন, কোথাও আবার স্থানীয়দের এই বিষয়ে খুব একটা উৎসাহ নেই। সে সব জায়গায় আমরাই নিয়মিত জল সরবরাহ করছি। আগামী দিনে শহরের বাকি অংশেও একইভাবে পশু ও পাখিদের জন্য পানির ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা নিয়েছি আমরা। আসন্ন বর্ষায় শহর জুড়ে গাছ লাগানোরও ভাবনা রয়েছে।
কলেজ পড়ুয়াদের এই উদ্যোগের কথা শুনে পাশে দাঁড়াতে আগ্রহী সিউড়ি পুরসভাও। সিউড়ির পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ওই পড়ুয়ারা শহরে যে উদ্যোগ নিচ্ছে তা সাধুবাদের যোগ্য। ওরা যদি পুরসভায় এসে কোনওরকম সহযোগিতার আবেদন করে, তা হলে লোকবল এবং অর্থবল দুই নিয়েই আমরা যথাসাধ্য পাশে থাকার চেষ্টা করব।