পড়াশোনা না করে টুকে পাস করা এমবিবিএস চিকিৎসকের হাতে রোগীর প্রাণ বাঁচানোর ভার দেয়া মানে তাকে কার্যত মৃত্যুর মুখে ছেড়ে দেয়া। এ অভিমত পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসক মহলের। তাদের মতে, ডাক্তারির বিভিন্ন পরীক্ষায় হবু চিকিৎসকদের গণ-টোকাটুকি ভয়াবহ জায়গায় পৌঁছেছে। উদ্বিগ্ন চিকিৎসক মহলের একাংশ এর প্রতিকার চেয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের দ্বারস্ত হয়েছেন।
চিকিৎসকদের মতে, চিকিৎসা করা আর পাঁচটা কাজের থেকে আলাদা। রাজ্যপালকে দেয়া চিঠিতে তারা লিখেছেন, গভীর দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, রাজ্যে মেডিক্যাল শিক্ষা রসাতলে গিয়েছে। অধিকাংশ পরীক্ষার হলে স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় অবজার্ভার বা পরিদর্শক পাঠাচ্ছে না এবং সিসিটিভি বন্ধ করে রাখা হচ্ছে।
‘বাড়াবাড়ি মাত্রায়’ টোকাটুকির অভিযোগ জানানো হয়েছে স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে। ‘অ্যাসোসিয়েশন অব হেল্থ সার্ভিস ডক্টর্স’-এর সরকারি চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। তাই তাঁরা রাজ্যপালকে চিঠি দিতে বাধ্য হয়েছেন।
অভিযোগকারী চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এমবিবিএস স্তরে অজস্র উত্তরপত্রে হুবহু একই উত্তর পাওয়া যাচ্ছে। এমনকি, ১০০ মাইল-১৫০ মাইল দূরের এক-একটি মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়াদেরও উত্তর দেখা যাচ্ছে এক। সম্প্রতি এসএসকেএমের এক পড়ুয়ার খাতার মধ্যে ছাপানো উত্তরপত্র পাওয়া গেছে। এর থেকে স্পষ্ট যে, আগে থেকে প্রশ্ন ফাঁস হয়ে যাচ্ছে এবং উত্তরপত্র তৈরি হয়ে বিভিন্ন সরকারি মেডিক্যাল কলেজে বিলি হচ্ছে। একটি বড় চক্র এর মধ্যে কাজ করছে মনে করে চিকিৎসকরা তদন্তও দাবি করেছেন।
শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের অনুগামী চিকিৎসক সংগঠন ‘প্রোগ্রেসিভ ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এরও বক্তব্য, কান পাতলেই বিভিন্ন সরকারি মেডিক্যাল কলেজ থেকে টোকাটুকি আর প্রশ্ন ফাঁসের কথা শোনা যাচ্ছে। মেডিক্যাল শিক্ষার ক্ষেত্রে এটা ন্যক্কারজনক।