পাকিস্তান নিয়ে আশার কথা শোনাচ্ছে না বিশ্বব্যাংকও। বিশ্বজুড়েই ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে একটি অর্থনৈতিক মন্দা আসতে পারে। পূর্বাভাস অনুযায়ী বিশ্বজুড়ে এ বছর ১.৭% প্রবৃদ্ধি হতে পারে। তবে উন্নত দেশগুলোর তুলনায়, মন্দার সময়ে সাধারণত অনুন্নত, উন্নয়নশীল দেশের বাসিন্দাদের জীবনেই আরও কঠিন প্রভাব পড়ে। তাই পাকিস্তানের পরিস্থিতি যে বেশ চিন্তার বিষয়, তা বলাই যায়। এমনিতেও করোনা-পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা, সঠিক নীতির অভাব ইত্যাদি কারণেও তলানিতে সে দেশের অর্থনীতি।
বিশ্বব্যাংকের রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ভয়াবহ বন্যার কারণে পাকিস্তানের অর্থনীতি তুমুলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত বছরের বন্যায় পাকিস্তানের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এলাকা প্রভাবিত হয়ছিল। প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ১৫ জন পাকিস্তানবাসী এ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে যদিও চিত্র কিছুটা বদলাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ভবিষ্যৎ যে ঠিক কেমন হবে, তা সঠিকভাবে কেউই বলতে পারছেন না।
গত এক মাসে পাকিস্তানে খাদ্যদ্রব্যের বিপুল মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। তলানিতে জ্বালানি ভাণ্ডারও। জ্বালানি বাঁচাতে ‘ন্যাশনাল এনার্জি কনজারভেশন প্ল্যানে’ সম্মতি দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানের ক্যাবিনেটে। এ পরিকল্পনার আওতায় রাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই মার্কেট, শপিং মল ও বিয়েবাড়ি বন্ধ করে দেওয়া হবে। এভাবেই বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ বাঁচাতে মরিয়া পাকিস্তান সরকার।
জ্বালানি সংকটে পাকিস্তানের ট্রেন চলাচলও বন্ধ হওয়ার জোগাড় হয়েছে। করাচি ও লাহোরে বেশ কয়েকটি মালগাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে বেশ কয়েক দিন। দেশের কিছু স্থানে গ্যাস সিলিন্ডারের অভাবে, প্লাস্টিকের বেলুনে এলপিজি ভরে ব্যবহার করা হচ্ছে। খাদ্যদ্রব্য ও জ্বালানির দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। সাপ্তাহিক মূল্যবৃদ্ধি গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩১ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। ফলে বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীটুকু জোগাড় করতেই কার্যত নাকাল পাকিস্তানবাসী। বছর ভিত্তিতে মূল্যবৃদ্ধির হার ৩০.৬০ শতাংশ।
বর্তমানে সেখানে গড়ে এক ডজন ডিমের দাম ৩৩০ টাকা। মুরগির মাংসের কথা তো ছেড়ে দেওয়াই ভালো। সেটি এখন প্রায় ৬৫০ টাকা প্রতি কেজি। আলু ৬০ টাকা। দুধ ১৯০ টাকা প্রতি লিটার।