দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পাট এমন এক পণ্য যার চাহিদা শেষ হওয়ার নয়। দেশের সম্পদ খুবই সীমিত। কাজেই এটিকে কাজে লাগাতে হবে। পাট থেকে উৎপাদিত রফতানিপণ্যে প্রণোদনা দেবে সরকার।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় পাট দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে আবার ক্ষমতা আসার পর পাট নিয়ে গবেষণার উপর জোর দেয়া হয়, যার কারণে পাটের জন্ম রহস্য উদ্ভাবন হয়। পাট ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন বাড়ানোতে আমাদের বিরাট সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে; এটি আবিষ্কারে। ফলে পাটের গুরুত্ব বেড়ে গেছে। কাজেই সেই সব দিকে লক্ষ্য রেখেই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, পাট এমন এক পণ্য যার চাহিদা শেষ হওয়ার নয়। পাটের সবকিছুই কাজে লাগানো যায়। পাট গাছ ও এটার আঁশ এবং পাতার বহুমুখী ব্যবহার হয় এখন। পাট ও চামড়ার সংমিশ্রণে বিভিন্ন পণ্য তৈরি হচ্ছে, সেগুলো বিদেশে রফতানিও করা হচ্ছে। আবার পাট শোলার ব্যবহার করে আসবাবপত্র বানানোতে গাছের উপর নির্ভরতা অনেক কমেছে। যদিও পাটের এক সময় খারাপ সময় আসে, যখন কৃত্রিম তন্তু আবিষ্কার হয়। কিন্তু মানুষ এখন সচেতন। যেহেতু পাট পরিবেশবান্ধব, তাই সেটিকে কীভাবে আরও উন্নত করা যায়, সেদিকে কাজ করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দেশের সম্পদ খুবই সীমিত। কাজেই এটিকে কাজে লাগাতে হবে। পাট একসময় রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা হতো। আমাদের দেশে সবচেয়ে উন্নত মানের পাট হয়। যাকে সোনালি আঁশ বলা হয়। অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখতে পারে এটি। পাট দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপকভাবে কাজে লাগতে পারলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনও বাড়বে।
পরিবেশবান্ধব পাটজাত পণ্যের ব্যবহার আরও বাড়াতে হবে-এ কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, পাটশিল্প রফতানির জন্য বিশ্বে নতুন নতুন বাজার খুঁজে বের করার উদ্যোগ নিতে হবে। সোনালি আঁশ, সোনালি দিনের হাতছানি দিচ্ছে। তাই রফতানিপণ্য বহুমুখীকরণে পাট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। পাট থেকে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে, সেই সুযোগটা কাজে লাগাতে হবে। পাট থেকে উৎপাদিত রফতানিপণ্যে প্রণোদনা দেবে সরকার।
শেখ হাসিনা বলেন, একটা সময় পাট শিল্পকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, এটা আমাদের জন্য ছিল খুবই অশুভ সংকেত। পাটকলগুলো শেষ করে দেয়নি সরকার, সেগুলো বেসরকারিকরণে প্রাণ ফিরেছে এ শিল্পে। পুরনো মিলের পাশাপাশি নতুন যন্ত্রপাতি কিনে বহুমুখী পণ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে।
যেসব প্রতিষ্ঠানকে পাটকলগুলো ইজারা দেয়া হয়েছে, তাদেরকে বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন মেশিনারিজ কিনে আরও নতুন নতুন পণ্য উৎপাদন করতে হবে। যারা ইজারা নিয়েছেন পাটকল, তারা নজরদারিতে থাকবেন। সোনালি আঁশই সোনার বাংলা গড়তে সহায়তা করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাটের শাড়ি ছাড়া একসময় বিয়েই হতো না দেশে। এখন তো সেসব হারিয়ে গেছে। আমি নিজেও এখন যে শাড়িটা পরে আছি, সেটিও পাটের তৈরি। পাটের তৈরি পণ্যের প্রচার প্রয়োজন। বর্তমানে মার্সিডিজ বেঞ্জ, বিএমডব্লিউ এর মত গাড়ির ইন্টেরিয়রে লাইনার বানানো হয় পাট থেকে। অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখতে পারে এটি।
এদিন পাটখাতে বিশেষ অবদানের জন্য ১১ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷