বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় সুযোগ না পেলে ছাত্রছাত্রীরা সাধারণত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কার্যক্রম শেষ হওয়ার আগেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কার্যক্রম শেষ করা হচ্ছে। এর ফলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়া যাবে কি না- এমন অনিশ্চয়তায় বৃহৎ সংখ্যক শিক্ষার্থী বাধ্য হয়েই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি হন। পরে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেলে ভর্তি বাতিল করতে হয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের। এতে একদিকে যেমন ভোগান্তি বাড়ে শিক্ষার্থীদের অন্যদিকে হয় অর্থের অপচয়। এ নিয়ে ভর্তিচ্ছু আর তাদের অভিভাবকদের ক্ষোভের শেষ না থাকলেও নির্বিকার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। চলতি বছরও বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আগেই ভর্তি কার্যক্রম শেষ করবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। সোমবার (২৯ জানুয়ারি) বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন আকতারুজ্জামান।
প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, ভর্তি বিজ্ঞপ্তি থেকে দেখা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি আবেদন শুরু হয়েছে গত ২২ জানুয়ারি। ভর্তি পরীক্ষা না থাকায় এসএসসি ও এইচএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে মেধাতালিকা প্রণয়ন করে বিষয় বরাদ্দ দেবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এরপর শিক্ষার্থীকে ভর্তির জন্য পরিশোধ করতে হবে ভর্তি ফি। বেসরকারি কলেজের ক্ষেত্রে লাগামহীনভাবে আদায় করা হয় এই ভর্তি ফি। ভর্তি কার্যক্রম শেষে আগামী ১০ মার্চেই প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস শুরু করবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
অথচ চলতি শিক্ষা বছরে সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (জিএসটি) ধারার ২৪ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আবেদনের নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে আগামী ৩১ জানুয়ারি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিকে ঘিরেই মূলত বৃহৎ সংখ্যক ছাত্রছাত্রী অপেক্ষায় রয়েছেন।
শুধু জিএসটি গুচ্ছের এই ২৪ বিশ্ববিদ্যালয় নয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও এখনো ভর্তি আবেদন শেষ হয়নি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষে চূড়ান্ত ভর্তি আবেদন শুরু হয়েছে গত ২৬ জানুয়ারি। এই আবেদন প্রক্রিয়া চলবে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। আগামী ৫ থেকে ৭ মার্চ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য অনলাইনে ভর্তি আবেদন শেষ হলেও কলা, আইন ও সমাজবিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি, ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে ২৪ ফেব্রুয়ারি, বিজ্ঞান ইউনিটের পরীক্ষা হবে ১ মার্চ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও মার্চের আগে ভর্তি কার্যক্রম শেষ হবে না। অথচ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সব ভর্তি কার্যক্রম শেষ করে মার্চেই ক্লাস শুরু করবে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভর্তিচ্ছু ছাত্রছাত্রী আর অভিভাবকরা।
এ ব্যাপারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান বলেন, ভর্তি হওয়া সর্বোচ্চ ২ শতাংশ শিক্ষার্থী তাদের ভর্তি বাতিল করে। এই ২ শতাংশের জন্য সারা দেশের কলেজগুলোতে ভর্তি হওয়া বৃহৎ সংখ্যক শিক্ষার্থীকে সেশন জটে ফেলা যায় না। আর ভর্তি কার্যক্রম শেষ করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এত সময় লাগবে কেন? একটি পরীক্ষা নিয়েই তো সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করা যায়। এটি করা না গেলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় দায় নেবে কেন?