পিএসসির ড্রাইভারের অ্যাকাউন্টে ঘুষের ৩ কোটি টাকা - দৈনিকশিক্ষা

পিএসসির ড্রাইভারের অ্যাকাউন্টে ঘুষের ৩ কোটি টাকা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) গাড়িচালক আতাউর রহমানের ব্যাংক হিসাবে সাড়ে পাঁচ বছরে ৩ কোটি ১১ লাখ টাকার বেশি জমা হয়েছে। চাকরি দেওয়ার নামে এ পরিমাণ অর্থ বিভিন্নজনের কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছেন তিনি। এ টাকা দেশের বিভিন্ন স্থানের ব্যাংক থেকে তার বেতন হিসাবে জমা দেওয়া হয়েছে। আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিলের পর পিএসসি তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছে। তবে কেউ ঘুষের টাকা ফেরত পায়নি বলে জানা গেছে। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) দেশ রুপান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন দুলাল হোসেন।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, আতাউর রহমান পিএসসির সাবেক সদস্য আলতাব আলীর গাড়ি চালাতেন। তার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার বালিকান্দি গ্রামে। পিএসসির সাবেক সদস্য আলতাব আলীর বাড়ি সুনামগঞ্জে। আতাউর রহমান সুনামগঞ্জের বাসিন্দা হওয়ায় তার নাম ভাঙিয়ে সরকারি চাকরি দেওয়ার নাম করে ঘুষ নেন।

অনেকেই ঘুষের টাকা পাঠাতেন আতাউরের ব্যাংকের বেতন হিসাবে, যা জমা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি উত্তোলন করে নিয়েছেন। তার বেতন হিসাবের একটি স্টেটমেন্ট এ প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে।

ব্যাংক স্টেটমেন্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আতাউর রহমান ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের ৮ মার্চ সোনালী ব্যাংকের গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ শাখায় একটি ব্যাংক হিসাব (নম্বর-০১১৭৩৪০৪৫১৭৬) চালু করেন। এই হিসাবে তার বেতন-ভাতা দেওয়া হয়। এটি তার বেতন হিসাব হলেও তাতে মাসে একাধিকবার লাখ লাখ জমা হয়েছে।

ব্যাংক স্টেটমেন্টের তথ্যমতে, সোনালী ব্যাংকে তার ৪ লাখ টাকার পারসোনাল লোন রয়েছে। এ ঋণের কিস্তি তার বেতন হিসাব থেকে কাটা হয়। ফলে হিসাবে জমা হয়েছে প্রতি মাসে ১৪ হাজার ২৭৮ থেকে ২০ হাজার ৪২০ টাকা। এ ছাড়া বোনাস হিসেবে ২১ হাজার ৪৫০ টাকা জমা হয়। এর বাইরে তার অ্যাকাউন্টে ৫০ হাজার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৯ লাখ টাকা পর্যন্ত জমা হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ নভেম্বর সিলেটের তাজপুর থেকে ৯ লাখ টাকা জমা হয়। একজন চাকরিপ্রত্যাশী তার ব্যাংক হিসাবে এ টাকা জমা দেন। এ চাকরিপ্রার্থী তাকে ১০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছেন।

ব্যাংকের তথ্য বলছে, আতাউর ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে ব্যাংক হিসাব খোলার পর ২০১৪ সাল থেকে ঘুষের টাকা জমা শুরু হয়। ওই বছরের ১৬ জুলাই প্রথম ২ লাখ জমা হয়। এরপর ৬ আগস্ট ১ লাখ, ১০ আগস্ট ৭৫ হাজার, ১২ আগস্ট ১ লাখ, ২১ আগস্ট ৫০ হাজার, ২৭ আগস্ট ৩ লাখ টাকা জমা হয়, যা পরদিনই উত্তোলন করা হয়। এরপরের মাসে ১ সেপ্টেম্বর ৩ লাখ, ৪ সেপ্টেম্বর ১ লাখ ৫০ হাজার, ৭ সেপ্টেম্বর ১ লাখ ৫০ হাজার, ১৫ সেপ্টেম্বর ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা হয়। এভাবে তার ব্যাংক হিসাবে ঢাকার বিভিন্ন স্থানের পাশাপাশি সুনামগঞ্জ, বরিশাল, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, টাঙ্গাইল, ঝিনাইদহ, পাবনা, গাজীপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে টাকা জমা হয়। ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই থেকে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে ১ মার্চ পর্যন্ত সাড়ে পাঁচ বছরে তার অ্যাকাউন্টে ১৮২ বারে মোট ৩ কোটি ১১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৮৮ টাকা জমা হয়, এ টাকা যা জমা হওয়ার পরপরই উত্তোলন করা হয়েছে।

ঘুষ দিয়ে চাকরি না পেয়ে অনেকে গাড়িচালক আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে পিএসসিতে লিখিত অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে পিএসসি কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তে আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পায়। তবে যারা টাকা দিয়েছেন তারা কেউ টাকা ফেরত পাননি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে আতাউর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি।

আতাউর রহমানের ব্যাংক হিসাবে এ বিপুল পরিমাণ টাকা জমা হওয়ার বিষয়ে পিএসসি কর্তৃপক্ষেরও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার - dainik shiksha কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত - dainik shiksha উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে - dainik shiksha ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের - dainik shiksha জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক - dainik shiksha মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0033140182495117