লাইসেন্সবিহীন মোটরসাইকেল আটক করাকে কেন্দ্র করে দুই ট্রাফিক পুলিশ সদস্যকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ১৫-২০ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।
এ ঘটনায় মোটরসাইকেলের চালকসহ তিন ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
গতকাল মঙ্গলবার রাত সোয়া আটটার দিকে বরিশাল নগরীর বান্দ রোডে পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে। এদিন রাত সাড়ে ১১টায় দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
আহতরা হলেন সার্জেন্ট মনিরুল ও কনস্টেবল মোস্তফা জামাল। আহত দুই পুলিশ সদস্য শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আটক শিক্ষার্থীরা হলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম, মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আনভির ইসলাম ও রমজান হোসেন সোহাগ।
এ ঘটনায় পুলিশের ওয়ারলেস ছিনিয়ে নিয়ে ভাঙচুর, বডি-অন ক্যামেরা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। অপরদিকে পুলিশের বিরুদ্ধে হেনস্তার অভিযোগ এনে ববি শিক্ষার্থীরা ঢাকা-পটুয়াখালী মহাসড়কে ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ ও অগ্নিসংযোগ করেছেন। এ সময় তারা পুলিশ হেফাজতে থাকা শিক্ষার্থীদের মুক্তি দাবি করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সোয়া সাতটার দিকে শেরেবাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সি গেটের সামনে সার্জেন্ট মনিরুল বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইছাত্র বহনকারী একটি মোটরসাইকেলের গতিরোধ করেন। তখন গাড়ির কোনো কাগজপত্র না থাকায় মামলা দিয়ে গাড়িটি আটক করেন তিনি। তখন একজন পুলিশকে উদ্দেশ করে শিক্ষার্থীরা বলে, আজকে পুলিশ পেটাবো। এই কথা বলে তারা ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যায়।
পরে রাত সোয়া আটটার দিকে ১৫-২০ জন ছাত্র পুলিশের ওপর হামলা চালায়। হামলার ঘটনার সময় সার্জেন্ট মনিরুল ও কনস্টেবল মোস্তফা জামাল পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ের সামনে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা সার্জেন্ট মনিরুলের ওয়ারলেস কেড়ে নিয়ে তা দিয়ে মনিরুলকে মারধর করে। এ সময় মনিরুলের বডি-অন ক্যামেরাও ছিনিয়ে নেয় তারা। এই ঘটনার ভিডিও করায় কনস্টেবল মোস্তফাকেও বেদম পেটানো হয়।
এদিকে থানা হেফাজতে থাকা ছাত্রদের মুক্তির দাবিতে রাত ৯টা থেকে ঢাকা-পটুয়াখালী মহাসড়ক ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ করে ববি শিক্ষার্থীরা। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে দূরপাল্লার যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। ঘটনাস্থলে বন্দর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহমান মুকুলসহ তার দল উপস্থিত হয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বরিশাল ট্রাফিক পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, আটক মোটরসাইকেলটির কোনো কাগজপত্র ছিলো না। চালকের মাথায় হেলমেট ছিলো না। তার লাইসেন্সও ছিলো না। তাই নিয়ম অনুযায়ী মোটরসাইকেল আটক করা হয়েছে। হামলায় সার্জেন্ট মনিরুল ও কনস্টেবল মোস্তফা গুরুতর আহত হয়েছেন। এসময় তারা পুলিশের বডি-অন ক্যামেরা ও ওয়ারলেস সেট নিয়ে গেছে।
কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন রাত সাড়ে ১১টায় দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, এই ঘটনায় তিন ছাত্রকে পুলিশ নিজ হেফাজতে নিয়েছে। ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে। ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।