বগুড়ায় পুলিশ ও বিএনপির সংঘর্ষে পথচারী ও শিক্ষার্থীসহ কমপক্ষে অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ, সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল এবং পুলিশ হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগসহ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের এক দফা দাবিতে বগুড়া জেলা বিএনপির নেতৃত্বে শহরের বনানী থেকে মাটিডালি পদযাত্রা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। বেলা ১২টার দিকে শহরের ইয়াকুবিয়া স্কুল মোড়ে বিএনপির কর্মসূটি চলাকালে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সদস্যরা এতে বাঁধা দেয়। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা ও সংর্ঘষ শুরু হয়। পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ পরিচয়ধারী নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পুলিশ রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস, টিয়ার সেল ও শটগানের গুলি ছুড়ে। ঘটনার পর শহরজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কিছু সময়ের জন্য দোকানপাট, মার্কেট ও শপিংমল বন্ধ হয়ে যায়।
এর আগে বেলা ১১ টার দিকে একই রকম ঘটনা ঘটে নওয়াববাড়ী সড়ক ও সার্কিট হাউসের সামনে এলাকায়। সেখানে লাঠিপেটা করে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাস, টিয়ার সেল ও শটগানের গুলি ছুড়ে।
বিএনপির দাবি, পুলিশের গুলি ও হামলায় তাদের কমপক্ষে ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশ বলছে, বিএনপির হামলায় ৬ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের দাবি, বিএনপি পদযাত্রার নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে শান্তিপ্রিয় বগুড়াকে অশান্ত করে তুলেছে। এ ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ প্র্রকাশ করেছেন বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মজিবর রহমান মজনু ও সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু।
বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা ও সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর হেনা বলেন, পূর্বঘোষিত কেন্দ্রীয় শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ বিনা উসকানিতে বিএনপির মিছিলে হামলা ও গুলি করেছে। পরে তারা দলীয় কার্যালয়ে কাঁদানে গ্যাস, টিয়ার শেল ও গুলি ছুড়েছে। পুলিশের গুলি ও হামলায় তাদের কমপক্ষে ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রশিদ বলেন, বিএনপি নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে ইয়াকুবিয়া মোড় থেকে সাত মাথা অতিক্রম করতে চেয়েছিলো। সেখানে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ চলছিলো। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ তাঁদের সাতমাথার দিকে যেতে নিষেধ করে। এতে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। পুলিশ ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করে আত্মরক্ষার্থে কাঁদানে গ্যাস, টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছুড়েছে।
সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শফিক আমিন কাজল জানান, পুলিশের টিয়অর সেল ও কাদানি গ্যাসে আহত হয়ে ইয়াকুবিয়া স্কুলের ২৭ ছাত্রী ও কয়েকজন পথচারী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাদের শ্বাসকষ্টের দেখা দিলেও অবস্থা গুরুতর নয়। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।