চট্টগ্রামের একটি পূজামণ্ডপে ‘ইসলামিক গান’ গাওয়া হয় পূজা উদযাপন কমিটির যুগ্ন সম্পাদক সজল দত্তের আহ্বানে। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) রইছ উদ্দিন।
রইছ উদ্দিন বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উদযাপন পরিষদের (জেএমসেন হলে) উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও গোলমাল সৃষ্টির ঘটনায় ২ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁরা হলেন মো. নুরুল ইসলাম, শহীদুল করিম।
তিনি বলেন, 'দুর্গাপূজা উপলক্ষে জেএমসেন হল পূজা মণ্ডপে শিল্পীদের মাধ্যমে সন্ধ্যার পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বী লোকজন পূজা মণ্ডপে আসেন এবং অনুষ্ঠান উপভোগ করতে থাকেন। ইতিপূর্বে পূজা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজল দত্ত চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির একদল শিল্পীকে অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করার জন্য অনুরোধ করেন। তার অনুরোধের প্রেক্ষিতে ঘটনার সময় ওই শিল্পী গোষ্ঠির সদস্য শহীদুল করিম, মো. নুরুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ ইকবাল, রনি, গোলাম মোস্তফা ও মো. মামুন পূজার অনুষ্ঠানে আসেন এবং একটি ইসলামিক গজল ও একটি বাউল গান পরিবেশ করেন। এর মধ্যে একটি গানের ভাষায় শব্দ চয়ন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বলে প্রতীয়মান হয়েছে। ইতিমধ্যে অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা ২টি গান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়াসহ উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।'
এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে শহীদুল করিম ও মো. নুরুল ইসলামকে আটক করা হয় বলে জানান উপ পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) রইছ উদ্দিন।
তিনি বলেন, জড়িত বাকি ব্যক্তিদেরও আটকের চেষ্টা চলছে। তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই ঘটনায় কোনো সাম্প্রদায়িক সংঘাত লাগানোর চেষ্টা ছিল কিনা তা যাচাই করা হচ্ছে।
পাশাপাশি এই ইসলামিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো পূজা উদযাপন কমিটির নেতা সজল দত্তকেও খোঁজা হচ্ছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত তাঁকে পাওয়া যায়নি।
পুলিশ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জেনেছে, শহীদুল করিম তানজিমুল উম্মাহ মাদ্রাসার শিক্ষক এবং মো. নুরুল ইসলাম, দারুল ইরফান একাডেমীর শিক্ষক। এই ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।