পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক মিলান কুন্ডেরা আর নেই। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ৯৪ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়েছে। বুধবার মোরাভিয়ান লাইব্রেরির মুখপাত্র আন্না এমরাজোভা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘দীর্ঘদিন অসুস্থতার পর গতকাল প্যারিসে মারা গেছেন মিলান কুন্ডেরা।’
কুন্ডেরা চেকস্লাভাকিয়ার শহর ব্রানোতে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু চেকোস্লোভাকিয়ায় ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দের সোভিয়েত আক্রমণের সমালোচনা করার পর ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি দেশ ত্যাগ করে ফ্রান্সে চলে যান। তার রচনা প্রায় চল্লিশের বেশি ভাষায় অনুদিত হয়েছে।
তার প্রথম উপন্যাস ‘দ্য জোক’ ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয়। উপন্যাসটিতে চেকোস্লোভাক কমিউনিস্ট শাসনের একটি জঘন্য চিত্র তুলে ধরেছিল।
কুন্ডেরার অন্যতম বিখ্যাত বই হচ্ছে, ‘দ্য আনবিয়ারেবল লাইটনেস অব বিং’। এটি ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয়। ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে এ লেখার ভিত্তিতে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ হয়। এতে অভিনয় করেন জুলিয়েট বিনোশ ও ড্যানিয়েল ডে-লুইস।
তার সমালোচনামূলক গ্রন্থ 'আর্ট অব নোভেল (১৯৮৬)' এ তিনি জীবন সম্পর্কে বলেন, 'জীবন একটি ফাঁদ, যা আমরা সব সময়ই জেনে এসেছি, আমাদের সম্মতি না নিয়েই আমাদের জন্ম দেওয়া হয়, আমরা এমন এক দেহে আটকা পড়ি যা আমরা নিজেরা পছন্দ করে বাছাই করিনি এবং আমাদের একমাত্র নিয়তি হচ্ছে অবধারিত মৃত্যু।'
১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন চেকোস্লোভাকিয়ার বেরনো শহরে জন্ম নেন কুন্ডেরা। তার বাবা ছিলেন একজন প্রখ্যাত পিয়ানোবাদক।
২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে ১৩ বছর বিরতির পর আবারো নতুন এক উপন্যাস প্রকাশ করেন কুন্ডেরা। তার 'দ্য ফেস্টিভাল অব ইনসিগনিফিকেন্স' বইটি মিশ্র প্রতিক্রিয়া অর্জন করে।
২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে চেক প্রজাতন্ত্র কুন্ডেরার নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয় এবং ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে তার আদি নিবাস বিরনোতে মিলান কুন্ডেরা পাঠাগার স্থাপিত হয়।